এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ জানুয়ারী : কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ‘ফসল বিমা যোজনা’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে । মমতা ব্যানার্জি তার সরকারের ‘বাংলা শস্য বিমা’ যোজনার অধীনে ৯ লক্ষ কৃষককে ৩৫০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন,’আমরা বরাবর বাংলার কৃষকদের পাশে ছিলাম, পাশে আছি, পাশে থাকবো।’ পালটা খোঁচা দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রশ্ন,’তাহলে রাজ্য সরকার কৃষকদের আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ কেনো?’
আসলে, বুধবার মমতা ব্যানার্জি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন,’অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ‘বাংলা শস্য বিমা’ প্রকল্পের আওতায় আমরা বাংলার ৯ লক্ষ কৃষককে সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩৫০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান শুরু করলাম। চলতি খরিফ মরসুমে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে যে সকল কৃষকের চাষের ক্ষতি হয়েছিল, তাঁদের এই সহায়তা করা হচ্ছে। ফসলের বিমার জন্য কৃষকদের কোনো টাকাও দিতে হচ্ছে না। কারণ, আলু, আখ সহ সব ফসলের প্রিমিয়ামের পুরো টাকাই রাজ্য সরকার দেয়। এটা আমাদের গর্ব যে, ২০১৯ সালে চালু হবার পর থেকে কেবলমাত্র ‘বাংলা শস্য বিমা’ প্রকল্পেই আমাদের সরকার ১ কোটি ১২ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে মোট ৩ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেছে। আমরা বরাবর বাংলার কৃষকদের পাশে ছিলাম, পাশে আছি, পাশে থাকবো। জয় বাংলা!’
তার সেই পোস্ট ট্যাগ করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা (PMFBY); দেশের কৃষকদের কল্যানে মোদী সরকারের একটি অন্যতম জনমুখী প্রকল্প। প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গে ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মাত্র ৩ বছরের জন্য কার্যকর করা হয়েছিল, তার পর রাজ্য সরকার রাজনৈতিক কারণে তা বন্ধ করে দেয়। এই ৩ বছরেই আবেদনকারী ১৩৫ লক্ষ কৃষককে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয় এবং ঐ সময়ে কেন্দ্র সরকার ৬৩৭ কোটি টাকা কৃষকদের অংশের ফসল বিমার প্রিমিয়ামে ভর্তুকি হিসেবে দেয়। পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পের অধীনে থাকা কৃষকরা ৩০৫ কোটি টাকা প্রিমিয়াম জমা দিয়ে ১,২১৮ কোটি টাকা বীমার ক্ষতিপূরণ হিসেবে পান।’
তিনি আরও লিখেছেন,’জাতীয় স্তরে ২০১৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত এই প্রকল্পে কৃষকরা ৩২,৪৭৫ কোটি টাকা প্রিমিয়াম রাশি জমা দিয়ে ১,৭২,১৩৮ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেয়েছেন। যার অর্থ হল কৃষকরা প্রিমিয়াম হিসাবে যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছেন তার থেকে অন্তত ৫ গুণেরও বেশি অর্থ ফিরে পেয়েছেন।পশ্চিমবঙ্গ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসে। কারণ ভোট বড়ো বালাই। যার ফলে এখনও পশ্চিমবঙ্গে অনাবৃষ্টি, ঝড় বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সেচ-এর সমস্যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনাগুলি আমাদের দেখতে হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল রাজ্যের শস্য বিমা প্রকল্প যদি এতটাই কার্যকরী, তাহলে রাজ্য সরকার কৃষকদের আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ কেনো?’