এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া,২০ জানুয়ারী : প্রায় আট বছর আগে শ্বশুরবাড়িতে বিষ পান করে আত্মঘাতী হয়েছিলেন কাটোয়া থানার অগ্রদ্বীপ অঞ্চলের মাখালতোড় গ্রামের গৃহবধু অনিতা দাস(২২) । এই ঘটনায় বধুর স্বামী প্রনব দাসসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পণের দাবিতে নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন মৃতার দিদি প্রতিমা দাস । অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । পরে অবশ্য তাঁরা জামিনে ছাড়া পেয়ে যান । মঙ্গলবার অভিযুক্ত স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করে কাটোয়া মহকুমা আদালত । বুধবার সাজা ঘোষনা হয় । এদিন মৃতার স্বামী প্রনব দাসকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন কাটোয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সুকুমার সূত্রধর । বাকি অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয় ।
জানা গেছে, মৃতা অনিতা দাসের বাবার বাড়ি কাটোয়ার সিঙ্গি গ্রামে । মাখালতোড় গ্রামের বাসিন্দা
প্রনব দাসের সঙ্গে ২০০৭ সালে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় অনিতাদেবীর । এরপর ২০১২ সালের ১৬ মে সকালের দিকে শ্বশুরবাড়িতে বিষপান করে আত্মঘাতী হন অনিতাদেবী । ওইদিনই অনিতাদেবীর স্বামী,শাশুড়িসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার দিদি প্রতিমা দাস ।
প্রতিমা দাস পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছিলেন, তাঁর বোনের বিয়েতে শ্বশুড়বাড়ির চাহিদা অনুযায়ী নগদ ৪০ হাজার টাকা, খাট, বিছানা সহ অন্যান্য দান সামগ্রী যৌতুক হিসাবে দেওয়া হয়েছিল । তা সত্ত্বেও বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা চেয়ে অনিতার উপর চাপ সৃষ্টি করা হত । টাকা না দিতে পারায় শারীরিকভাবে অত্যাচার চালানোর পাশাপাশি আত্মহত্যায় প্ররোচনাও দেওয়া হত বলে অভিযোগ ।
এদিকে অভিযোগ পাওয়ার পরেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ । পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে । পরে তারা জামিনে ছাড়া পায় । শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ আট বছর পর এদিন এই মামলার নিষ্পত্তি হয় ।
মামলার সরকারি আইনজীবি প্রসেনজিত সরকার জানিয়েছেন,এই মামলায় ১৪ জন সাক্ষী ছিলেন । কিন্তু ১২ জন আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন । সমস্ত প্রমান ও সাক্ষীদের দেওয়া সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই স্বামী প্রনব দাসকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত । তবে বাকি পাঁচ অভিযুক্তকে এদিন বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয় ।।