এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৬ জুন : নূপুর শর্মার সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন নড়াইল সদর উপজেলার বিচালী ইউনিয়নের (Bichali Union of Narail Sadar Upazila) মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজের(Mirzapur Degree College) হিন্দু ছাত্র রাহুল দেব রায় । সেই কারনে তাঁকে কলেজের মধ্যে পিটিয়ে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল ধর্মান্ধ মুসলিমরা । প্রাণ বাঁচাতে ওই পড়ুয়া আশ্রয় নিয়েছিলেন অধ্যক্ষের ঘরে । ইতিমধ্যে অধ্যক্ষ থানায় ফোন করে দেন । ফোন পেয়ে পুলিশবাহিনী আসে । ফলে ওই পড়ুয়া সেদিন কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে যান । এদিকে রাহুলের প্রাণ বাঁচানোর অপরাধে কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতোর মালা পড়িয়ে গোটা এলাকা ঘোরালো ধর্মোন্মাদদের দল । আর পুরো ঘটনাটি ঘটে পুলিশের সামনেই । প্রথমে ঘটনাটি বাংলাদেশের স্থানীয় প্রশাসন চেপে গেলেও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমশ প্রকাশ পেতেই নিন্দার ঝড় উঠছে । এর প্রতিবাদে আগামী সোমবার রাজধানী ঢাকার শাহবাগে একটি সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, একাদশ শ্রেণীর ছাত্র রাহুল দেব রায় নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের বাবুল রায়ের ছেলে । গত ১৭ জুন নূপুর শর্মার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, “প্রণাম নিও বস নূপুর শর্মা”, “জয় শ্রীরাম” । প্রথমে রাহুলের সহপাঠী মুসলিম ছাত্ররা ওই পোস্টের বিরুদ্ধে মুখ খোলে । তারা পোস্টটি মুছে দেওয়ার জন্য রাহুলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে । কিন্তু তাদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি ওই হিন্দু পড়ুয়া । সেই কারনে রাহুলের সহপাঠী ধর্মান্ধ মুসলিম ছাত্ররা তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার অভিযোগ তুলে আশপাশে বসবাসকারী কট্টরপন্থীদের উসকে দেয় ।
এরপর গত ১৮ জুন ধর্মান্ধদের দল কলেজে চড়াও হয়ে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস ও রাহুলকে কলেজ থেকে টেনেহেঁচড়ে বের করে চুড়ান্ত হেনস্থা করে । পুলিশবাহিনীর সামনেই তাঁদের জুতোর মালা পড়িয়ে গোটা এলাকা ঘোরানো হয় । কার্যত নির্বাক দর্শকের ভূমিকা পালন করে পুলিশ । পরে পুলিশ উলটে ওই পড়ুয়া ও অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে । যদিও এনিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন নড়াইল সদর থানার (Narail Sadar Police Station) ওসি শওকত কবীর ।
প্রসঙ্গত,হিন্দুদের উপর অত্যাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছে । সম্প্রতি টিপ পড়ার অপরাধে ঢাকার এক হিন্দু কলেজ শিক্ষিকার গায়ের উপর মোটর সাইকেল চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক মুসলিম পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে । ওই কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করে দায় সেরেছিল বাংলাদেশ প্রশাসন । স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসনের ভিতরে যদি কট্টরপন্থী মানসিকতা ঢুকে যায় তাহলে সেখানকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা কি করে সম্ভব হবে ?