নীহারিকা মুখার্জ্জী,ফলতা(দক্ষিণ ২৪ পরগণা), ১২ জুন : সুনামের সঙ্গে পঠন পাঠনের পাশাপাশি সমাজের প্রতি নিজেদের দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়ে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। গত ৫ ই জুন থেকে বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে সপ্তাহ ব্যাপী পরিবেশ দিবস পালন ও জাতীয় বৃক্ষরোপণ উৎসব কর্মসূচী। গত ৫ ই জুন স্থানীয় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শানু বক্সির উৎসাহে এবং উপস্থিতিতে সপ্তাহ ব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়। প্রতিদিন বিদ্যালয়ের কচিকাচারা এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে বৃক্ষরোপণ করতে থাকে। তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুধু তাই নয়, প্লাস্টিকজাতীয় দ্রব্য এবং মোবাইল, টিভি প্রভৃতি ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য পদার্থ কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে চলেছে সেটি বুঝিয়ে বলার পাশাপাশি সেগুলি বর্জনের জন্য আহ্বান করা হয়। মঙ্গলবার, ১১ জুন অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা এলাকায় সবুজয়ানের লক্ষ্যে আম, লেবু, জামরুল, পেয়ারা প্রভৃতি চারা গাছ নিয়ে ফলতা থানা ও স্থানীয় শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ শ্রী মন্দিরে যায়। অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সঞ্চিতা মণ্ডল।
ফলতা থানার আইসি সুব্রত দাস নিজে উপস্থিত থাকতে না পারলেও তার পরামর্শে ও উৎসাহে অন্যান্য আধিকারিকরা প্রবল উৎসাহে নিজেদের নামে একটি করে চারাগাছ রোপণ করেন। পরে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ শ্রী মন্দিরের জগন্নাথ মল্লিকের তত্বাবধানে মন্দির প্রাঙ্গণে বেশ কয়েকটি চারাগাছ রোপণ করা হয়। চারাগাছগুলির পরিচর্যার দায়িত্ব দুটি প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা নেন। পরে সবাই বিদ্যালয়ে ফিরে আসে। একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বর্তমান পরিস্থিতিতে বৃক্ষরোপণের উপকারিতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলেন। পাশাপাশি ফাঁকা জায়গা দেখলেই সেখানে চারাগাছ রোপণ করা ও সেগুলি পরিচর্যা করার বিষয়ে তাদের উৎসাহ দেন। শেষে উপস্থিত সমস্ত শিক্ষার্থীর হাতে একটি করে চারাগাছ তুলে দেওয়া হয়।
কর্মসূচির শেষ দিন অর্থাৎ আজ বুধবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পরিবেশকে বিষয় করে একটি ‘বসে আঁকো’ প্রতিযোগিতা হয়। জানা যাচ্ছে প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীকে পুরস্কৃত করা হবে।
সঞ্চিতা দেবী বললেন,’আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য বিদ্যালয়ে আসার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। যেভাবে এই বিদ্যালয়টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ছাপ রেখে যাচ্ছে তাতে কোনো প্রশংসা যথেষ্ট নয়। একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে আমি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব।’ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন,’বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে হলে বৃক্ষরোপণের বিকল্প কিছু নাই। তাই আমরা এই কাজে এগিয়ে এসেছি। তবে এখানেই আমাদের দায়িত্ব শেষ নয়। সেগুলি পরিচর্যার জন্য আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব। তারজন্য তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতা প্রার্থনা করেন।’।