প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৫ নভেম্বর : ‘এখানে টাকা ছাড়া কাজ হয় না- টাকা দিতেই হবে’।এই কথা জানিয়ে দুর্ঘটনায় মৃতের ছেলের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠলো বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের ডোমেদের বিরুদ্ধে। ঘটনার বিহিত চেয়ে শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মৃতের ছেলে মৃণালকান্তি কোলে। অভিযোগ পয়েই নড়ে চড়ে বসেছেন প্রশাসন কর্তারা । প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় ,এখন সেদিকেই তাকিয়ে মৃত কৃষ্ণচন্দ্র কোলের ছেলে ও পরিজনরা ।
সদ্য পিতৃহারা মৃণালকান্তি কোলের বাড়ি জেলার মেমারি থানার পাল্লারোডের কাঁটাটিকর গ্রামে । তিনি পেশায় ডেকরেটর ব্যবসায়ী । লিখিত অভিযোগে প্রশাসনকে তিনি জানিয়েছেন,১ নভেম্বর পথ দুর্ঘটনায় তাঁর বাবা কৃষ্ণচন্দ্র কোলে মারা যান । পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পরদিন অর্থাৎ ২ নভেম্বর সেখানে কৃষ্ণচন্দ্র বাবুর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয় । মৃণালকান্তি বাবুর অভিযোগ জানিয়েছেন,ওইদিন বিকালে তাঁর বাবার মৃতদেহ তাঁদের হাতে হস্তান্তরের সময়ে মর্গের ডোমেরা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে।সেই টাকা দিতে তিনি রাজি না হয়ে প্রতিবাদ করেন ।তখনই টাকা না দিলে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে না বলে মর্গের ডোমেরা তাঁকে হুমকি দেয়। তা নিয়ে বাকবিতন্ডা চলার সময়ে ডোমেরা তাঁকে জানায়, তাঁরা ময়নাতদন্ত হওয়া মৃতদেহ যথাযথ ভাবে সেলাই না করে এবং পলিথিন ও কাপড় না মুড়িয়েই মৃতদেহ হস্তান্তর করবে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে ।মৃণালকান্তি বাবু বলেন,ডোমেদের এই দাবিও তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন মানতে রাজি হন না ।তাই বাকবিতন্ডা দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে থাকে । সরকার অধীস্থ মর্গের ডোমেদের এমন হুঁশিয়রি ও দুর্ব্যবহারে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। শেষে সাড়ে তিনি হাজার তাঁদের টাকা নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে আদায় করে তারপর ময়নাতদন্ত হওয়া তাঁর বাবার মৃতদেহ ডোমেরা যথাযথ ভাবে হস্তান্তর করে ।মৃতদেহ হস্তান্তরের সময়ে ডোমেরা ধমকের সুরে তাঁদের বলে,’এখানে (মর্গে)টাকা ছাড়া কাজ হয় না-টাকা দিতেই হবে ,শুধু শুধু দেরি করলে ।’ মৃণালকান্তি কোলে জানান ,এই গোটা ঘটনার কথাই তিনি রাজের মুখ্যমন্ত্রী সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত ভাবে জানিয়ে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছেন।
এই অভিযোগের বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন,’এই বিষয়ে আমি কিছু বলবো না, যা বলার হাসপাতাল সুপার বলবেন ।’ এরপর বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সুপার তাপস ঘোষকে ফোন করা হলে তিনিও কোন মন্তব্য না করে বিষয়টি নিয়ে একই ভাবে এড়িয়ে যান । যদিও জেলাশাসক প্রিয়াংকা সিংলা জানিয়েছেন অভিযোগপত্র এখনও তিনি হাতে পাননি । তবে এমন ঘটনা যদি ঘটে থাকে ,তার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন জানিয়েছেন,অভিযোগর বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে ।।