এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৪ অক্টোবর : কথিত ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ভোটব্যাংকের রাজনীতি করতে গিয়ে দেশের কিছু নেতানেত্রীরা নিজের দেশ তথা নিজ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেন বারবার ৷ যদিও অন্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসে তারা টুঁশব্দ পর্যন্ত করেননা । সম্প্রতি দীপাবলীতে প্রদীপ প্রজ্জলনের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইউপির সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন । এদিকে আর এক কথিত ধর্মনিরপেক্ষ দল তৃণমূল কংগ্রেসের কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের আরও একটা কীর্তি নিয়ে তুলোধুনো করছে বিজেপি৷ কানাডার নোভা স্কটিয়া প্রদেশের কেপ ব্রেটন দ্বীপের ঠিকানা দেওয়া এনএটিই (@CelticAshes) নামে এক এক্স ব্যবহারকারী দীপাবলি উৎসবকে “আবর্জনা” ও ভারতীয়দের “বুদ্ধিহীন” বলে মন্তব্য করেছেন । যাকে সমর্থক করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে । নিজের দেশ ও সম্প্রদায় সম্পর্কে অবমাননাকর কথা বলা এক বিদেশিকে সমর্থন করায় বিজেপির তরুনজ্যোতি তিওয়ারি তৃণমূল সাংসদকে “সাদা চামড়ার আধিপত্যের চিরস্থায়ী দাস” বলে কটাক্ষ করেছেন ।
তরুনজ্যোতি ওই কানাডিয়ানের পোস্ট ও পোস্টের কমেন্ট সেকশনে মহুয়া মৈত্রের প্রতিক্রিয়ার স্ক্রীন শর্ট এক্স-এ শেয়ার করেছেন৷ যেখানে এনএটিই (@CelticAshes) নামে ওই এক্স ব্যবহারকারী কানাডায় দীপাবলি উযযাপনের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন,’ঠিক এভাবেই, আমরা বুদ্ধিহীন ভারতীয়দের তাদের দীপাবলির আবর্জনা দিয়ে আমাদের সুন্দর পশ্চিমা দেশগুলিকে সম্পূর্ণ নোংরা জায়গায় পরিণত করতে দিয়েছি, যার সাথে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।এবং সরকারকে জবাবদিহি করা উস্কানি নয়।’ প্রতিক্রিয়ায় মহুয়া মৈত্র লিখেছেন,”আমি আপনার সাথে সহমত৷” যদিও আজ শুক্রবার ওই কানাডিয়ানের পোস্টে কমেন্ট সেকশনে মহুয়ার প্রতিক্রিয়া নজরে পড়েনি৷
তবে উল্লেখ্য যে প্রোফাইলে কানাডার নোভা স্কটিয়া প্রদেশের কেপ ব্রেটন দ্বীপের ঠিকানা দেওয়া এনএটিই (@CelticAshes) নামে ওই এক্স ব্যবহারকারী নিজেকে “উদ্যোক্তা” হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন৷ যার প্রতিটি পোস্টে রয়েছে ভারত বিরোধী ও ভারতীয়দের ছোট করার মানসিকতার প্রতিফলন। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
রাজ্য বিজেপির যুবনেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’সাদা চামড়ার আধিপত্যের চিরস্থায়ী দাসের সাথে দেখা করুন — মহুয়া মৈত্র। তিনি একসময় টাকার বিনিময়ে তার লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড বিক্রি করেছিলেন, জাতির আস্থার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন, এবং আজ তিনি ভারতীয়দের এবং আমাদের সভ্যতার আলো এবং গর্বের উৎসব দীপাবলিকে উপহাস করে এক নতুন স্তরে নেমে গেছেন। তার উত্তরটি দেখুন — তিনি একজন বর্ণবাদীর সাথে খোলাখুলিভাবে একমত যিনি ভারতীয়দের “মস্তিষ্ক মৃত” এবং দীপাবলিকে “আবর্জনা” বলেছিলেন।’
তিনি আরও লিখেছেন,’তার কাছে, পাশ্চাত্যের সবকিছুই শ্রেষ্ঠ, আর হিন্দুদের সবকিছুই ঘৃণ্য। তিনি কখনও ইসলামিক বা খ্রিস্টীয় রীতিনীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন না – কোরবানি, গোহত্যা, শবে বরাতের পটকা বা নববর্ষের আতশবাজির বিরুদ্ধে একটিও কথা বলেন না। কিন্তু দীপাবলির সময় তার ঘৃণা বিষের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এটা আর রাজনীতি নয় – এটা দাসত্বের মানসিকতা, যার প্রোথিত আত্ম-ঘৃণা এবং ঔপনিবেশিক আতঙ্ক। দুর্ভাগ্যবশত, এমন একজন ব্যক্তি ভারত থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তার জন্য এবং যারা এখনও এই হিন্দু-বিরোধী, ভারত-বিরোধী মানসিকতাকে ন্যায্যতা দেয় তাদের জন্য লজ্জার বিষয় ।’
তবে এই প্রথম নয়, ভোটব্যাংক রাজনীতির জন্য স্বধর্মের দেবদেবী নিয়ে কটুক্তি করার পুরনো ইতিহাস রয়েছে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের । এর আগে দেবী কালীকে মদ মাংস খাওয়া নারী বলে বিতর্কের সৃষ্টি করেন মহুয়া । ২০২২ সালের জুলাই মাসে, পরিচালক লীনা মণিমেকলাইয়ের একটি তথ্যচিত্রের পোস্টার নিয়ে বিতর্কের সময়, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেছিলেন যে তিনি মনে করেন দেবী কালী এমন একজন দেবী যিনি মদ এবং মাংস খান। তিনি আরও বলেন যে, প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব উপায়ে দেবতা ও দেবীর পূজা করার এবং তাঁদের কল্পনা করার অধিকার আছে। চলতি বছরে নিজের নির্বাচনী এলাকায় একটি র্যালিতে যোগ দিয়ে বৈষ্ণবদের পবিত্র তুলসীর মালাকে কাঠের মালা বলে বিতর্কের সূত্রপাত করেন । মহুয়ার কথায়, রাজ্য সরকারের অনুদান নিলেও কাঠের মালা পরা ভোটাররা বিজেপিকে ভোট দেয় । যদিও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির স্নেহধন্য ওই মহিলা সাংসদ তার এই প্রকার মন্তব্যের জন্য এযাবৎ কোনো ক্ষমাপ্রার্থনা করেননি ।।

