এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৯ জুলাই : বাংলাদেশের মুসলিমদের একটা বড় অংশের মানুষ প্রকাশ্যে ভারত ও হিন্দু বিরোধীতায় লিপ্ত থাকে । সাম্প্রতিক কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় হিন্দু ও ভারত বিরোধী স্লোগান শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশীদের মুখ থেকে । সেই সমস্ত ভিডিও ভারতে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে । হিন্দু ও ভারত বিরোধী জামাত ও রাজাকারদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি তুলল রাজ্য বিজেপি । সোমবার কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিসে এই দাবি জানাতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়কদের একটা প্রতিনিধি দল । কিন্তু তাদের ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিসের সামনে কলকাতা পুলিশ আটকে দেয় বলে অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর ৷ যদিও পরে ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিসের হস্তক্ষেপে শুভেন্দু অধিকারীরা নিজেদের দাবি পেশ করে আসেন । কিন্তু রাজ্য পুলিশের এই ভূমিকায় তীব্র খুব প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল নেতা ।
ডেপুটি হাই কমিশনারের অফিসের সামনে নিয়ে একটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি ৷ শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘বাঙালি এবং হিন্দু বিষয়ক বিষয় নিয়ে আজ আমরা ডেপুটি হাইকমিশনারের অফিসে এসেছিলাম । আমরা সবাই হিন্দু বিধায়ক । আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশে কিছু কিছু ভিডিও ক্লিপিং-এ শ্লোগানের ভাষা এবং কিছু জামাত, রাজাকার এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কিছু বিষয়ে আমরা দেখেছি এবং আমরা এনিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন । আমরা গত শনিবার ডেপুটি হাই কমিশনারকে ইমেইল করেছিলাম বিধানসভায় বিজেপির অফিস থেকে । তিনি আমাদের উত্তর দেন এবং আসার জন্য আমন্ত্রণ করেন । তিনি এমএলএদের নামের একটা তালিকা আমাদের কাছে চান, আমরা সেটা দিয়ে দিই ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’এই রাস্তায় ব্যারিকেড থাকেনা । এখানে মমতার পুলিশ, যারা জুতো মোজা খুলে কালীপুজোর দিন মমতা ব্যানার্জির বাড়িতে নোংরা ফেলার ভ্যাটে প্রসাদ বিতরণের কাজে থাকেন, সেই মমতার পুলিশ আমাদের আটকায় ।’ তিনি লিখিত অনুমতি দেখিয়ে বলেন,’একটা জঙ্গলের রাজত্বে আমরা বসবাস করছি । আর মমতার চাকর পুলিশ আজ সেই কাজ করেছে । আমি যথাযথ পদক্ষেপ নেব । এর আগে বিনীত গোয়েলকে শিক্ষা দিয়েছি । রাজভবনে আমার সঙ্গে অসভ্যতামি করেছিল । এখানে আজকে যারা অসভ্যতামি করেছে তাদেরকে কি করে শিক্ষা দিতে হয় আমরা জানি । আইনের মধ্যে দাঁড়িয়ে সে শিক্ষা আমি তাদের দেব ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমরা চারটে ভিডিও ক্লিপিং নিয়ে এসেছিলাম । বাংলাদেশের সেই সমস্ত ভিডিও ক্লিপিং-এ বলা হচ্ছে,’শেখ হাসিনার বাবার নাম হরে কৃষ্ণ হরে রাম‘ । হরে কৃষ্ণ হরে রাম হিন্দুদের কাছে সঞ্জীবনী মন্ত্র । প্রভু শ্রী চৈতন্যদেব, শ্রীল প্রভুপাদ , হরিচাঁদ ঠাকুর-গুরুচাঁদ ঠাকুর এবং যত মত তত পথের প্রবক্তা শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব তাঁরা এই নাম জপের মধ্য দিয়ে আমাদের ভিতরের আধ্যাত্বিক চেতনাকে জাগ্রত করেছেন ।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেই । আমরা নাক গলাতেও চাই না । আমরা মমতা ব্যানার্জি নই । যিনি শরণার্থীদের বলেন সিএএ করতে দেব না । আর রোহিঙ্গাদের বলেন তোমাদের জন্য আমার সব ঘরবাড়ি খোলা আছে। এসো রোহিঙ্গা তোমাদের খাওয়াবো, পড়াবো । হিন্দু হকার উচ্ছেদ করে তোমাদের আবার বসাবো । আমরা এসবে থাকি না ।’
তিনি বলেন,’আমরা দ্বিতীয় স্লোগান বলেছি বাংলাদেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের দোকানে দোকানে ঢুকে রাজাকার, জামাত, হেফাজতের লোকেরা ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন‘ লিখে লিখে দিয়ে আসছে।’ বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আরে বন্ধু, পেঁয়াজ না গেলে তো ৩০০টাকায় কেজি হয়ে যাবে পেঁয়াজের দাম । কেন করছেন এসব ?‘
তিনি বলেন, তৃতীয় অভিযোগ সম্প্রতি যে আন্দোলন হয়েছে, বাইরের দেশে ইস্যু নিয়ে আমাদের কোন মন্তব্য নেই। সেই আন্দোলনে ‘ভারত যাদের মামার বাড়ি বাংলা ছাড়ো তাড়াতাড়ি‘ স্লোগান দেওয়া হয়েছে । এই ভাষা আমরা বরদাস্ত করব না। ভারত আমাদের মা । ভারত মাতার অপমান আমাদের অপমান ।’
সবশেষে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’চতুর্থত,ওই দেশের সরকার যখন বিজিবিকে প্রয়োগ করে বিজিবিকে বলা হয় ‘তোমরা মোদীর সন্তান সীমান্তে ফিরে যাও‘ । দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করার অধিকার কারোর নেই । বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী । যিনি তৃতীয়বার ২৯৩টা আসন নিয়ে ভারতবর্ষের তৃতীয় বারের জন্য শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন । আমরা বলেছি সিডি দিয়ে গেলাম চিহ্নিত করুন,আর আইনের আওতায় আনুন । আমরা এসব জিনিস বরদাস্ত করবো না।’
শুভেন্দু অধিকারী দাবি জানান,’এই হিন্দু বিরোধী মানসিকতা, ভারত বিরোধী স্লোগান, রাষ্ট্রনায়কের নাম ধরে অসম্মান করা লোকদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে৷’ সবশেষে তিনি ল্যাপটপে সেই সমস্ত ভিডিও ফুটেজের একাংশ সাংবাদিকদের দেখান ।।