এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুয়াহাটি,১৩ জুন : আসামের গোয়ালপাড়া জেলা সম্পাদক জোনালি নাথের খুনের ঘটনায় তার প্রেমিক হাসানুর ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । হাসানুর ইসলাম অল আসাম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (AAMSU) এর একজন নেতা ছিলেন, যদিও পরে তিনি কংগ্রেস পার্টিতে যোগদান করেন এবং ওয়ার্ড সদস্য নির্বাচিত হন । পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকারও করেছে বলে জানিয়েছেন আসাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আইনশৃঙ্খলা প্রশান্ত ভূঁইয়া এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আইজিপি দেবরাজ উপাধ্যায় ।
অর্গানাইজ উইকলির প্রতিবেদন অনুযায়ী,ধৃত হাসানুর ইসলাম কবুল করেছে যে বিগত দুই বছর ধরে জোনালি নাথের সঙ্গে তার পরকীয়া চলছিল। কিন্তু হাসানুরের আরেকটি সম্পর্ক ছিল এবং সে তার পরিবারের সম্মতিতে মেয়েটিকে বিয়ে করতে চেয়েছিল । এনিয়ে হাসানুর ইসলাম ও মৃত জোনালী নাথের মধ্যে এনিয়ে একাধিকবার ঝগড়াও হয় ।
শেষে সে ১১ জুন সন্ধ্যায় অভিযুক্ত জোনালী নাথকে ইসলামপুর এলাকায় দেখা করতে ডেকে পাঠায় । হাসানুর ইসলামের গাড়ির ভেতরে দু’জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয় । তারই মাঝে হাসানুর জোনালীকে বেশ কয়েকবার আঘাত করলে গাড়ির ভেতরেই সে মারা যায় । খুনি তার মৃতদেহ গোয়ালপাড়া জেলার ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের শালপাড়ায় নিয়ে যায় এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাতীয় সড়কের কাছে একটি নির্জন জায়গায় ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় ।
১২ জুন সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে । ধৃতকে গোয়ালপাড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে পাঁচ দিনের নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ।
পুলিশের সন্দেহ এই হত্যাকান্ড নিছক উত্তেজনার মুহুর্তে হয়নি,এর পিছনে অন্য কোনো রহস্যও থাকতে পারে । হাসানুর ব্যবহৃত গাড়িটি পুলিশ আটক করলেও এখনো কোনো হত্যাকাণ্ডের অস্ত্র উদ্ধার হয়নি । উদ্ধার হয়নি জোনালি নাথের ব্যাগ ও মোবাইল ফোনটিও । পুলিশের অনুমান, মৃতার মোবাইল ফোন উদ্ধার হলে হত্যাকাণ্ডের অনেক রহস্যের উন্মোচন হতে পারে ।
মৃতা জোনালি নাথের বাড়িতে রয়েছেন স্বামী ও দুই মেয়ে । বড় মেয়ে বিএসসি নার্সিং পড়ছেন । ছোট মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সুখের সংসার । কিন্তু একজন মুসলিম যুবকের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে নিজেকে যেমন বেঘোরে প্রাণ হারাতে হল, তেমনি পরিবারকেই ফেলে দিয়ে গেলেন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ।।

