এইদিন ওয়েবডেস্ক,কালিয়াগঞ্চ(উত্তর দিনাজপুর), ২২ এপ্রিল : উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে এক হিন্দু কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে ভিন ধর্মের এক যুবকের বিরুদ্ধে । নিহত কিশোরী কালিয়াগঞ্জের মালগাঁও পঞ্চায়েতের গাঙ্গুয়া গ্রামের বাসিন্দা । তিনি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন । শুক্রবার সকালে বাড়ির অদূরে একটি নয়ানজুলিতে তার দেহ ভাসতে দেখা যায়। পরিবারের দাবি,আগের দিন(২০ এপ্রিল ২০২৩) বিকেলে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল ওই যুবক । সেইই মেয়েটিকে ধর্ষণের পর খুন করেছে । এদিকে এই ঘটনার কথা চাওড় হতেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার মানুষ । পুলিশ লাঠিচার্জ করে উত্তেজিত জনতাকে হঠিয়ে দিয়ে কিশোরীর মৃতদেহটি কার্যত টানতে টানতে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ । সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । এদিকে পুলিশের এই প্রকার অমানবিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । কিশোরীকে খুনের ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গেছে ।
এদিকে শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর দেহ গ্রামে আনা হলে দেহ নিয়ে পথ অবরোধ শুরু করেন ক্ষিপ্ত জনতা । তাদের দাবি,অভিযুক্ত যুবককে গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দিতে হবে । এই দাবিতে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে তারা তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই শুরু হয় ইটবৃষ্টি । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পালটা টিয়ার গ্যাসের সেল ও রবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ । ডাকা হয় র্যাপিক অ্যাকশন ফোর্সকে । তারপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ । শেষে পুলিশ নিহত কিশোরীর মৃতদেহ নিয়ে চলে যায় । এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশবাহিনীর টহল চলছে ।
এদিকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ নিহত কিশোরীর পরিবারের সাথে দেখা করতে গেলে বিজেপি বিধায়কদের আটকে দেয় পুলিশ । কিন্তু তৃণমূল নেতাকে যেতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে । নিজের ফেসবুক পেজে শুভেন্দু অধিকারী ঘটনার নিন্দা জানিয়ে লিখেছেন, ‘এক যাত্রায় পৃথক ফল… কালিয়াগঞ্জে নৃশংস ভাবে ধর্ষণের পরে খুন হওয়া রাজবংশী বাচ্চা মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতে বাধা দেওয়া হল মমতা পুলিশের দ্বারা বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্র নাথ রায় (রাজবংশী সমাজের প্রতিনিধি) এবং বুধরাই টুডুকে। জোর করে থানায় বসতে বাধ্য করা হল, আর অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কানহাইয়া লাল আগরওয়ালকে মৃতার পরিবারের সাথে দেখা করানোর জন্য সম্পূর্ণ সাহায্য করল মমতা পুলিশ। কেন বিজেপি বিধায়কদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হল? প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা? এই সরকার আর এই সরকারের পুলিশ সব পারে। নারী সুরক্ষার দায় এই পুলিশের নেই তাই বলে মৃতার নশ্বর দেহটি অমানবিক ভাবে টানতে টানতে নিয়ে গেল, শেষ সম্মানটুকু দিল না। পশ্চিমবঙ্গের লজ্জা। ধিক্কার জানাই। আমরা মেয়েটির পরিবারের পাশে আছি, এবং ওর মায়ের দাবি গুলোর সমর্থন জানাই ।’।