এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০২ সেপ্টেম্বর : ভারতে সন্ত্রাস ছড়াতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়েদা ও তেহরিক-ই- তালেবান । ওই দুই সংগঠন ভারতের মুসলিম যুবকদের নিয়োগ করার ষড়যন্ত্রও চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি । দুই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি(এনআইএ) । কর্ণাটক সহ দেশের চারটি রাজ্যে এনআইএ-এর দল একযোগে অভিযান চালিয়েছে এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত ডিজিটাল সরঞ্জাম ছাড়াও উস্কানিমূলক বেশ কিছু উপকরণ বাজেয়াপ্ত করেছে । বাকি তিন রাজ্য হল মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও তামিলনাড়ু । এনআইএ তদন্তে জানতে পেরেছে যে ওই দুই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল যুবকদের টার্গেট করত এবং তাদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য চেষ্টা করত।
মহারাষ্ট্রের তিনটি স্থানে তল্লাশির সময় বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং অন্য তিনটি রাজ্যেও উদ্ধার হয়েছে সন্ত্রাসবাদে প্রচারমূলক বেশ কিছু সামগ্রী । এই ষড়যন্ত্রে জড়িতদের খুঁজে বের করতে এবং সন্ত্রাসী সংগঠন দুটির প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে এনআইএ এই ডিভাইসগুলি খতিয়ে দেখছে ।
অভিযানগুলি ২০২৩ সালের এপ্রিলে নথিভুক্ত একটি মামলার এনআইএর তদন্তের অংশ ছিল । মামলাটি আল-কায়েদা ও তেহরিক-ই- তালেবান এই দুই সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত দুই সন্ত্রাসবাদীকে কেন্দ্র করে । এই দুই সন্ত্রাসীকে চলতি বছরের এপ্রিলে গ্রেপ্তার করেছিল এনআইএ । আফগানিস্তানে জমি কেনার জন্য বিদেশে অর্থ পাঠানোর সঙ্গে জড়িত ছিল ওই দুই সন্ত্রাসী ।
এনআইএ তদন্তে জানতে পেরেছে যে তারা ভারতে তাদের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় মুসলিম যুবকদের নিয়োগ করছিল । ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানো, শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার লক্ষ্যে এই ষড়যন্ত্র চালানো হয়েছিল । উল্লেখ্য,ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদা (AQIS) হল একটি কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন,যারা ভারতীয় উপমহাদেশে একটি ইসলামিক রাষ্ট্র এবং ইসলামিক খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে । তেহরিক-ই-তালেবান হল একটি সংগঠন যা আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে কর্মরত বিভিন্ন ইসলামিক সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ।
এছাড়াও জুলাই মাসে মধ্যপ্রদেশের রতলাম জেলায়, এনআইএ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘আল সুফা’-এর সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছিল। এই সময়, জয়পুরে সন্ত্রাসের ষড়যন্ত্রকারী সন্ত্রাসী ইমরান খানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয় । ‘আল সুফা’ আইএসআইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এটি ২০১২ সালে রতলাম থেকে শুরু হয়েছিল। তখন সেখানে ৪০-৫০ জন সন্ত্রাসী থাকলেও পরবর্তীতে ইসলামের নামে মুসলিম যুবকদের বিভ্রান্ত করে এই সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয় । ২০১৪ সালে, এই সংগঠনের লোকেরা রতলামের মহউ রোড বাসস্ট্যান্ডে বজরং দলের নেতা কপিল রাঠোর এবং তার হোটেলে কাজ করা পুখরাজকে নির্মমভাবে হত্যা করে । এছাড়াও ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে, রতলামের তরুণ শঙ্খলাকে গুলি করে হত্যা করে ‘আল সুফা’র সন্ত্রাসীরা ।
চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসেও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং স্থানীয় চোরাচালানকারীদের মধ্যে জোট ভাঙতে এনআইএ একটি বড় আকারের অভিযান শুরু করেছিল । গত ১৭ মে হরিয়ানা, দিল্লি, পাঞ্জাব, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর প্রদেশের অন্তত ১০০ টিরও বেশি জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল এনআইএ । তার মধ্যে শুধুমাত্র দিল্লি- এনসিআরে ৩২ টি জায়গায় অভিযান চালানো হয় । পাশাপাশি পাঞ্জাব এবং চণ্ডীগড়ের বিভিন্ন এলাকা সহ ৬৭ টি জায়গায় চলে তল্লাশি অভিযান ।।