এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ ডিসেম্বর : কেন্দ্র সরকারের আনা ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় কলকাতার রাণী রাসমনিতে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা প্রতিবাদ সভায় শনিবার শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি মন্তব্য করেছিলেন যে যেখানেই ২০-৩০ জন একসাথে দীর্ঘদিন নামাজ পড়ে সেই স্থান ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি হয়ে যায় । তার এই বক্তব্যে সিপিএম বা কংগ্রেসকে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা না গেলেও, তীব্র প্রতিবাদে সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপি । আজ সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতার দলীয় কার্যালয়ে এনিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে কালীঘাট কালীমন্দিরকেও ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি ঘোষণা করা হতে পারে বলে । কল্যাণের মত নেতাদের মুখ দিয়ে এই ধরনের কথা বলিয়ে মমতা ব্যানার্জি আদপে ‘ভোটব্যাংকের স্বার্থে ওয়াকফ বোর্ড ব্যবহার করে মুসলিমদের খুশি করতে চান’ বলে মন্তব্য করেছেন অগ্নিমিত্রা ।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন,’কল্যাণ ব্যানার্জি মঞ্চ থেকে বলেছেন যে মুসলমানরা যে জায়গায় নামাজ পড়ে সেই জায়গাটাই নাকি অক্ক সম্পত্তি । সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেছেন দক্ষিণ কলকাতার গোটোটাই ওয়াকফের সম্পত্তি । মমতা ব্যানার্জি কি চাইছেন ? মুসলমানদের তুষ্ট করতে তিনি কত নিচে নামবেন ? ওয়াকফ বোর্ড ব্যবহার করে, তিনি এখন আমাদের কালীঘাটের কালী মন্দির, আমাদের বাড়ি, রেড রোড,এমনকি রাজভবনও দখল করতে চান ! হিন্দুদের আবার কি পলায়ন করতে হবে, যেমনটা আমাদের পূর্বপুরুষেরা বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছিল ?’
তিনি বলেন,’ধর্মনিরপেক্ষ দেশে হিন্দু ধর্ম সহ অন্যান্য ধর্ম প্রতিষ্ঠানগুলি উপাসনা করলেই তারা তাদের সম্পত্তি বলে দাবি করে না।তাহলে কেন বিশেষ এক ধর্ম ওয়াকফ বোর্ডের নাম করে সব দখল করতে চাইছে?ভোটব্যাংকের স্বার্থে মমতা ব্যানার্জী তা সমর্থন করছেন । মমতা ব্যানার্জীর তুষ্টিকরণ রাজনীতির স্বার্থে আজ বাংলার হিন্দুদের অস্তিত্ব সঙ্কটে ।’
প্রসঙ্গত,সাংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কল্যাণ ব্যানার্জি গত ৩০ নভেম্বর রাণী রাসমণি রোগে মুসলিম জনতার মাঝে বক্তব্য রাখার সময় বলেছিলেন, ‘আপনি যেখানেই নামাজ পড়বেন সেই জায়গাটা ওয়াকফ সম্পত্তি বলে চিহ্নিত হবে । যেকোনো একটা জায়গায় যদি কুড়ি জন, ২৫ জন, ১৫ জন, পাঁচজন নিয়মিত নামাজ পড়ে সেটা ওয়াকফ পপার্টি বলে ডিড করা হবে ।’
তার এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ । তিনি কল্যাণকে কটাক্ষ করে বলেন,’যদি ওয়াকফ আইনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে তারা যেখানে নামাজ আদায় করে সেই জায়গা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি হয়ে যাবে। এর মধ্যে থাকতে পারে বাজার, স্টেশন, খেলার মাঠ, বাস স্ট্যান্ড, ট্রেনের বগি, বিমানবন্দর,নবান্ন (রাজ্য প্রশাসনিক ভবন), কল্যাণ ব্যানার্জির বাড়ি, এমনকি তিলজলায় টিএমসি পার্টি অফিস – মূলত, এই জাতীয় প্রতিটি স্থানকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে ঘোষণা করা যেতে পারে।’।