এইদিন ওয়েবডেস্ক,দিনাজপুর(বাংলাদেশ),০৭ জানুয়ারী : সিজার করে সন্তান প্রসব করানোর পর প্রসূতির পেটে আস্ত তোয়ালে রেখেই সেলাই করে দিলেন চিকিৎসক । বাড়ি ফেরার পরে মহিলার পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হলে আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয় । তখন পেটের ভিতরে রাখা ওই বস্তুটি ধরা পড়ে । পরে ফের অস্ত্রোপচার করে তোয়ালেটি বের করা হয় । বাংলাদেশের দিনাজপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকের এক চিকিৎসকের এই প্রকার আজব কীর্তিতে রীতিমতো শোড়গোল পড়ে গেছে দেশ জুড়ে ।
জানা গেছে,দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর এলাকায় রয়েছে রানীরবন্দর পলিটেক ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতাল নামে ওই বেসরকারি ক্লিনিকটি । ক্লিনিকটি মালিক রেজা ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি । প্রসব বেদনা হলে গত বছর ৩০ নভেম্বর সেখানে ভর্তি করা হয় ওই বধুকে । ওইদিনই তার অস্ত্রোপচার করেন দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট রবিউল আলম । মহিলার একটি পূত্র সন্তান প্রসব করানো হয় । কিন্তু প্রসূতির পেটের সেলাই করার আগে হাত পরিষ্কার করার তোয়ালেটি বের করতে ভুলে যান চিকিৎসক রবিউল আলম । ওই অবস্থাতেই বধুকে দিন দুয়েক হাসপাতালে রাখার পর রিলিজ করে দেওয়া হয় । কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু সময় ধরে প্রসূতি পেটে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করতে শুরু করেন । শেষে পেটের আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করার পর ধরা পড়ে তার পেটের মধ্যে কিছু একটা বস্তু রয়েছে । সিভিল সার্জন এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, রানীরবন্দরের ওই ক্লিনিকের ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। প্রসূতির পরিবারকে অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল। তবে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে তাঁরা লিখিত অভিযোগ করেননি।
তবে এই প্রথম নয়, এই ধরনের ঘটনা ইতিপূর্বেও ঘটেছে বাংলাদেশে । ২০২০ সালের ৩ মার্চ মনিরা খাতুন (১৯) নামে এক তরুনীর পেটে একটি কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়েছিল ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ওই ঘটনার ৬৪৩ দিন পর আজ শনিবার ওই হাসপাতালেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তরুণীর পেট থেকে আনুমানিক ছয় ইঞ্চি লম্বা আকৃতির ওই কাঁচি বের করা হয় । বারবার একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।।