এইদিন ওয়েবডেস্ক,কালিয়াগঞ্জ(উত্তর দিনাজপুর), ২৭ এপ্রিল : পুলিশের গুলিতে যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে । জানা গেছে,কালিয়াগঞ্জ থানায় অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশ কর্মীদের মারধরের ঘটনায় ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে এলাকায় । থানায় হামলাকারীদের সন্ধানে বুধবার রাতে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের রাধিকাপুর অঞ্চলের চাঁদগাও গ্রামে গিয়েছিল বিশাল পুলিশবাহিনী । রাধিকাপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মনের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ । অভিযোগ,বিষ্ণু বর্মনকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছিল । একথা এলাকায় চাওড় হতেই গ্রামবাসীরা পুলিশের পথ আটকায় । সেই সময় পুলিশ পরপর দু’রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ । তার মধ্যে একটি গুলি এসে লাগে মৃত্যুঞ্জয় বর্মন ( ৩৩) নামে এক যুবকের শরীরে । আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু চিকিৎসকরা ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করে ।
এদিকে কালীয়াগঞ্জের ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি নিহতের ছবিসহ টুইট করেছেন,’কালিয়াগঞ্জে ৩৩ বছরের এক রাজবংশী যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে মমতা পুলিশ। ট্রিগার হ্যাপি ‘মমতা’ পুলিশ মধ্যরাতে ২:৩০ নাগাদ বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মনের বাড়িতে অভিযান চালায় (২৭ এপ্রিল ২০২৩) কিন্তু তাকে খুঁজে পায়নি । রবীন্দ্রনাথ বর্মনের ছেলে ৩৩ বছর বয়সী মৃত্যুঞ্জয় বর্মণ নামে এক রাজবংশী যুবককে তারা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে । অত্যাচার এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে ৷ যখন রাজ্য জ্বলছে এবং নাগরিক অস্থিরতার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে এদিকে তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্রাট নিরোর মতো আনন্দ করছেন ।’ তিনি আরও লিখেছেন,’গত বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা ব্যানার্জি কালিয়াগঞ্জের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ তাকে পালন করল । রাষ্ট্রের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় তাকে নিতে হবে।জনগণের উচিত গণতান্ত্রিকভাবে এ ধরনের আন্তঃসন্ত্রাস ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া ।’
প্রসঙ্গত,উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের মালগাঁও পঞ্চায়েতের গাঙ্গুয়া গ্রামের বাসিন্দা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজবংশী কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকেই উত্তপ্ত এলাকা । এই ঘটনায় পুলিশ এক মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করলেও পুলিশের তদন্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট এলাকার মানুষ । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন করা হলেও পুলিশ তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে । একই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ।মঙ্গলবার ক্ষিপ্ত জনতা কালিয়াগঞ্জ থানায় অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদের বেদম মারধর করে । মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ ৩০ জনকে গ্রেফতার করে । এরপর বুধবার সকাল থেকেই শুরু হয় ধরপাকড় অভিযান ।।