এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০৪ আগস্ট : বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলিমদের দ্বারা কি অবর্ণনীয় নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে দেশের হিন্দুরা তার জলজ্যান্ত সাক্ষী হলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের নিগন রেলস্টেশনে রেলের জায়গায় অস্থায়ী ছাউনি করে বসবাস করা বছর পঞ্চাশের হিন্দু মহিলা পূর্ণীমা দাস(৫০) । বছর তিনেক আগেও বাংলাদেশের যশোরের ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকা বাড়ি, গোয়াল ভর্তি গরু-ছাগল, ১২ বিঘে জমির মালিক এবং ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা ছিল তাদের । কিন্তু একদিন স্থানীয় মুসলিমরা দল বেঁধে এসে তার ছোট মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় । মেয়েটিকে তারা গণধর্ষণ করে ছেড়ে দেয় । এরপর আতঙ্কে ভারতে পালিয়ে আসেন পূর্ণীমাদেবীরা ।
আজ রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের দোকানে দোকানে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতে এসে ‘এইদিন’-এর সাংবাদিকের কাছে তিন বছর আগে ঘটে যাওয়া সেই অমানবিক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শিউরে ওঠেন পূর্ণীমা দাস । তিনি বলেন, ‘আমার বড় মেয়ে তখন অন্তঃসত্ত্বা ছিল । তাই বড় মেয়ে রেহাই দেয়া তারা । কিন্তু ওরা ছোট মেয়েকে ছাড়েনি । এরপর আমরা আর বাংলাদেশের থাকার সাহস করতে পারিনি আর । প্রতিবন্ধী স্বামী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে আমরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসি । তারপর ঠেক খেতে খেতে চলে আসি মঙ্গলকোটের নিগনে । স্থানীয় কিছু বাসিন্দাদের সহযোগিতায় কোনরকমে মাথা গোজার মত একটা ঝুপড়ি করে আমরা বসবাস করছি।’
জানা গেছে,নিগনে আসার পরেই সন্তানের কন্যা জন্মদেন পূর্ণীমাদেবীর বড় মেয়ে শিল্পি (২৭) । আজ তার নাতনির বয়স আড়াই বছর । ছোট মেয়ে ২৫ বছরের যুবতী । স্বামী অর্জুন দাস (৫৭) প্রতিবন্ধী । পেটের তাগিদে কখনো পূর্ণিমাদেবী কখনো তার বড় মেয়ে শিল্পি(২৭) বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে বেড়ান । নিজেদের পোশাক কেনার মত সামর্থ্য নেই তাদের । মানুষের কাছে পুরনো পোশাক চেয়ে নিজেদের লজ্জা নিবারণ করেন বলে জানিয়েছেন পূর্ণিমাদেবী ।
তিনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, বাংলাদেশে আমাদের কি না ছিল । ১২ বিঘা জমিতে চাষ হতো । সেদেশের ব্যাংকে এখনো টাকা আছে । স্বচ্ছল পরিবার । ব্যাঙ্কের টাকা ছাড়া সব কিছু স্থানীয় মুসলিমরা কেড়ে নিয়েছে । সেই কারনে আজ আমাদের হাত পেতে ভিক্ষা করতে হচ্ছে। পূর্ণিমা দেবীর অভিযোগ যে তার জামাই পলাশ দাসকে (৩০) মদের সঙ্গে কিছু খাইয়ে পাগল করে দিয়েছে সেখানকার মুসলমানরা । আজ কার্যত সে মুসলমান হয়ে গেছে ।
পূর্ণীমাদেবী জানিয়েছেন, তার বাপের বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়িতে । তার দাবি যে তার পরিবারকেও ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক, যাতে তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারেন ।।