জয়দীপ মৈত্র,দক্ষিণ দিনাজপুর,১১ নভেম্বর : এখনও জমিয়ে শীত না পড়লেও শীতের আভাস সকাল ও মধ্যরাতে ভালভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছে । ইতিমধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে লেপ তৈরির ধুম। প্রতিবছরের মতন ব্যস্ততা বেড়েছে স্থানীয় ও বিহার থেকে আগত কারিগরদের। এরই মধ্যে বেশ কিছুদিন থেকে শেষ রাতে ও খুব সকাল পর্যন্ত শীত অনুভূত হচ্ছে। আর এই অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এখন বিভিন্ন বাড়িতে বা পাড়ায় পাড়ায় সকলে প্রস্তুতি নিচ্ছে লেপ-তোষক বের করা সহ সেটি মেরামত বা নতুন করে তৈরি করা। বলাই বাহুল্য যার ধুম পড়েছে সারা জেলা জুড়ে। কেউ বা বাক্সবন্ধি করে রাখা লেপ-তোষক বের করছেন ঠিক করার জন্য। আবার কেউ নতুনভাবে তৈরি করছেন ফলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লেপ-তোষকের কারিগররা। দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কারিগররা তৈরি করছেন লেপ-তোষক। কারিগরদের টুংটাং লেপ তৈরি যন্ত্রের আওয়াজ আর বাতাসে উড়ে বেড়ানো তুলা জানিয়ে দিচ্ছে শীত এসে গেছে। ফলে জেলার নানান লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতেও কারিগররা কাজে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজারে বিক্রি ও তৈরিতে কাটছে তাদের ব্যস্ত সময় ।
এই বিষয়ে বিহার থেকে আগত এক কারিগর জানান, “সপ্তাহ আগেও তেমন কাজকর্ম ছিল না। গত এক সপ্তাহ ধরে ভোরের হালকা কুয়াশায় শীতের আমেজ একটু বিরাজ করছে। এতেই লেপ তৈরির অডার্র শুরু হয়েছে।” জেলার আরও এক কারিগর আহমদ আলী বলেন, “এখন কেবল শীতের একটু প্রবাহ শুরু। আর কয়েকদিন পর রাত-দিন সমান তালেই কাজ করতে হবে আমাদের। বতর্মানে পুরনো লেপ ভেঙে নতুনভাবে তৈরির অডার্রই বেশি পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে গামের্ন্টসের তুলা দিয়ে তৈরি লেপও বিক্রি হচ্ছে।” এদিকে বিহার থেকে আসা লেপ-তোষক তৈরির কারিগরেরা (ধুনক) ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পুরোদমেই। ধুনক মন্টু চৌধুরী জানান, “এক সপ্তাহ হতে আমি প্রতিদনই প্রায় ৫-১০টি লেপ অর্ডার পাচ্ছি। আশা করছি এখন বিয়ের মাস পাশাপাশি শীত পড়তে সেকারনে প্রতিদিন ২০-২৫টি অর্ডার পাবো। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের খুব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তবে এখনো কিছুটা একই অবস্থা থাকলেও বর্তমানে লেপ তৈরির অর্ডার ভালই পাচ্ছি। মূলত, “আমার কাছে প্রতিটি লেপ এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত পাঁচ কেজি তুলা দিয়ে বানিয়ে বিক্রি করছি।” বিহার থেকে আসা কারিগর রাকেশ চৌধুরী জানান, “আমরা শীত আসার শুরুতেই লেপ তোশক মোটামুটি অর্ডার পেয়েছি পাশাপাশি অগ্রিম কিছু লেপ-তোশক বানিয়ে রাখছি। সাধারণত অনেক ক্রেতা রেডিমেট ভাবে এসব ক্রয় করে থাকেন।” তিনি আরও জানান, “এবার তুলার দাম একটু বেশি হওয়ার কারনে বড় লেপের দাম গত বছরের চেয়ে ১৫০ টাকা হতে ২০০ টাকা বেশি লাগছে। আবার সিঙ্গেল লেপে বেড়েছে ১০০ টাকা মতন। পাশাপাশি কারিগরদের মুজুরি ও এবার একটু বেশি বেড়েছে।” তবে বলাই বাহুল্য শীত নিবারণ করতে সারা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষ এখন লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত। আর ব্যাপক অর্ডার পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে কারিগরদের।।