এইদিন ওয়েবডেস্ক,ধনিয়াখালি(হুগলি),০৯ নভেম্বর : বাবা-মা ও একমাত্র বিবাহিতা বোনকে কুপিয়ে খুন করে নিজের হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করল এক যুবক । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার ধনিয়াখালি থানার দশঘড়া রায় পাড়া এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতদের নাম অসীম ঘোষাল (৬৮), শুভ্রা ঘোষাল (৬০) এবং পল্লবী চট্টোপাধ্যায় (৩৩) । মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ধনিয়াখালি থানার পুলিশ । পুলিশ মৃতদেহগুলি উদ্ধারের পাশাপাশি প্রমথেশ ঘোষাল নামে ওই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ধনিয়াখালি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে । বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন ওই যুবক । ওই যুবক ঠিক কি কারনে এই ঘটনা ঘটালো তা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছেন প্রতিবেশীরা । তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান,আর্থিক সমস্যার কারনে মানসিক অবসাদে এই ঘটনা ঘটিয়েছে প্রমথেশ । হুগলির পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আমনদীপ জানিয়েছেন,আহত যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পরেই ঘটনার প্রকৃত কারন জানা যাবে ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,প্রমথেশ ঘোষালদের আদি বাড়ি তারকেশ্বরে । তবে দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে বাবা অসীম ঘোষাল ও শুভ্রাদেবীকে নিয়ে দশঘড়া রায় পাড়াতে ভাড়া ছিলেন প্রমথেশবাবু । একমাত্র বোন পল্লবী চট্টোপাধ্যায়ের বিয়ে হয়েছে হুগলি জেলার ঝাপানডাঙায় । ভাইফোঁটা উপলক্ষে এসেছিলেন বাপের বাড়ি এসেছিলেন পল্লবীদেবী ।
অকৃতদার প্রমথেশ ঘোষাল গৃহশিক্ষকতা করতেন । বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসাবে এলাকায় তাঁর যথেষ্ট সুখ্যাতি ছিল ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য শুনুন :
স্থানীয় বাসিন্দা নারায়নচন্দ্র মান্না,সুমন ঘোষরা বলেন, ‘এদিন সকালে দেখা যায় বাড়ির সদর দরজার কাছে বসে রয়েছেন প্রমথেশ । তাঁর হাতের শিরা কাটা ছিল । বাইরে থেকে লক্ষ্য করলে ঘরের ভিতরে ওই যুবকের বাবা-মা ও বোনের রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় । এরপর থানায় খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে ।’ তাঁরা বলেন, ‘আমাদের অনুমান বাবা-মা ও বোনকে কুপিয়ে খুন করে নিজের হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ওই যুবক ।’ তবে এই ঘটনার কারন নিয়ে তাঁরা কেউই কিছু স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি । তবে তাঁরা জানান,দীর্ঘ দিন ধরেই সিরোসিস অব লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন প্রমথেশ । তাঁর বাবা-মাও শারিরীকভাবে অসুস্থ ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানান ।
জানা গেছে,প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে নিজের ও বাবা-মার চিকিৎসার পাশাপাশি সংসার খরচ চালাতে গিয়ে আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়েছিলেন প্রমথেশবাবু । এনিয়ে তিনি কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন । তার জেরেই তিনি এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেন বলে অনুমান পুলিশের । মৃতদেহগুলির হাত,গলা প্রভৃতি অংশে গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে । এদিন মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ।।