এইদিন ওয়েবডেস্ক,গাজিয়াবাদ,২৩ অক্টোবর : ‘হনি ট্রাপে’ ফাঁসানোর পর অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে ব্লাকমেল চক্রের পর্দাফাঁস করল উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ জেলা সাইবার সেল ও নন্দগ্রাম থানার পুলিশ । গ্রেফতার হয়েছে চক্রের মূল পান্ডা এক দম্পতি ও ৩ তরুনী । ধৃতদের কাছ থেকে স্মার্টফোন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টসহ বেশ কিছু সামগ্রী উদ্ধার করে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ । ওই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হনি ট্রাপে ফাঁসানোর পর তারা ন্যুড ভিডিও তৈরি করত । তারপর তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইর্যাল করে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে ব্লাকমেল করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করত । দীর্ঘ দিন ধরে চক্রটি সক্রিয় ছিল বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ ।
জানা গেছে, গুজরাটের রাজকোটের বাসিন্দা তুষার নামের জনৈক এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে ওই চক্রের হদিশ পায় উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ জেলার পুলিশ । ওই ব্যক্তির সম্প্রতি রাজকোটে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন । তাঁর অভিযোগ ছিল,তাঁকে একটি সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে প্রথমে হনি ট্রাপে ফাঁসানো হয়েছি । তারপর সেক্স চ্যাটের নামে তাঁর ন্যুড ভিডিও রেকর্ডিং করা হয় । পরে ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে তাঁকে ব্লাকমেল করে ৮০ লাখ টাকা আদায় করেছিল চক্রটি ।
জানা গেছে,গুজরাটের রাজকোটের পুলিশের কাছ থেকে ইনপুট পেয়ে প্রথমে গাজিয়াবাদ জেলা সাইবার সেল এই যৌনতার কারবারে যুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চালাতে শুরু করে । তদন্তে সাইবার সেল জানতে পারে একটি কল সেন্টারের মাধ্যমে এই কারবারটি চালানো হচ্ছে । পরে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বরের সুত্র ধরে চক্রের পান্ডাদের ছবি সাইবার সেলের হাতে আসে । অবশেষে কল সেন্টারের হদিশ পায় সাইবার সেল ।
তারপর স্থানীয় সুত্র থেকে খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে নন্দগ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় রাজনগর এক্সটেনশনের অফিসার সিটির একটি আবাসনের এক নম্বর ফ্লাটে চলা ওই কল সেন্টারে হানা দেয় সাইবার সেলের একটি দল । গ্রেফতার করা হয় এক দম্পতি ও ৩ যুবতীকে ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে,এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড যোগেশ গৌতম ও তার স্ত্রী স্বপ্না । রাজনগরের একটি আবাসনের ফ্লাট ভাড়া নিয়ে তারা কল সেন্টার চালাচ্ছিল । তারা “স্ট্রিপচ্যাট ডট কম”(stripchat.com) নামে একটি সাইটের মাধ্যমে মানুষকে প্রথমে জালে ফাঁসাতো । পটিয়ে পাটিয়ে শিকারের হোয়াটস অ্যাপ নম্বর নিয়ে নিত । তারপর হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কলের মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করত । পরে ওই ভিডিও হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে শিকারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উসুল করত ওই চক্রটি । এযাবৎ ওই দম্পতি জুটি প্রায় ৫০০ জন মানুষকে এভাবে ব্লাকমেল করে প্রায় ২২ কোটি টাকা আদায় করেছে বলে জানতে পেরেছে সাইবার সেল ।
জানা গেছে,সাইবার সেল জানতে পেরেছে সানি নামে এক অস্ট্রেলিয়ানের কাছ থেকে এই প্রকার ব্লাকমেলিংয়ের ব্যাবসার প্রশিক্ষণ নিয়েছিল স্বপ্না । ফেসবুকের মাধ্যমেই তার সানির সঙ্গে পরিচয় হয় । স্বপ্নার সঙ্গে সেক্স চ্যাটের সময় সানিই তাকে যৌনতার কারবারের পরামর্শ দিয়েছিল । তা মনে ধরে স্বপ্না ও তাঁর স্বামী যোগেশ গৌতমের । তারপর ফ্লাট ভাড়া নিয়ে কল সেন্টারের আড়ালে তারা রীতিমত ব্লাকমেলিংয়ের ব্যাবসা খুলে বসে ।।
ছবি : গাজিয়াবাদ পুলিশের অফিসিয়াল ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত ।