প্রদীপ চট্টোধ্যায়,বর্ধমান,২৪ আগষ্ট : বিধানসভা ভোটে অভাবনীয় জয়ের পরেও তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে বিরাম পড়ছে না পূর্ব বর্ধমানে ।ভোটের ফল প্রকাশের কয়েকদিন পরেই গোষ্ঠী বিবাদে খুন হন জেলার মঙ্গলকোট বিধানসভার লাখুড়িয়া অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি অসীম দাস । সেই ঘটনার পর একমাস কাটতে না কাটতে ফের মঙ্গলবার শহর বর্ধমানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মৃত্যু হল দলেরই এক কর্মীর । মৃতর নাম অশোক মাঝি (৩৮)। তার বাড়ি বর্ধমান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের খালাসী পাড়ায় । অশোক মাঝির মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই শহর বর্ধমানে চরমে উঠেছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী । শুরু হয়েছে ধরপাকড় অভিযান । ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে এদিন রাত পর্যন্ত পুলিশ তিন জনকে আটক করেছে বলে জানা গিয়েছে ।
তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদে একের পর এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব । বর্ধমানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠির মধ্যে এদিন দুপুরে অশান্তি শুরু হয় ।দলেরই একাংশের হাতে আক্রান্ত হন বর্ধমান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিম। তিনি অভিযোগে বলেন ,এদিন দুপুরে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময়ে বর্ধমানের খালাসি পাড়ায় দলেরই কয়েকজন পথ আটকে রড, লাঠি দিয়ে তাঁকে আক্রমণ করে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে তিনি ছাড়াও এলাকার তৃণমূল কর্মী অশোক মাঝি ও তার স্ত্রী চন্দনা মাঝি জখম হন।গুরুতর জখম অশোক মাঝিকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সন্ধ্যায় বর্ধমান হাসপাতালেই অশোক মাঝির মৃত্যু হয়।।মহম্মদ সেলিম দাবি করেছেন, যারা এই হামলা আক্রমণ চালিয়েছে তারা সকলেই বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক খোকন দাস ও তৃণমূল নেতা শিবশংকর ঘোষের অনুগামী।খোকন দাস ও শিবশংকর ঘোষের নির্দেশেই তাঁদের উপর এদিন প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে ।
সৈয়দ মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য শুনুন :
তৃণমূল কর্মী অশোক মাঝির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাতে বর্ধমানে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ে । তৃণমূলের কর্মীরা বর্ধমান কালনা রোডে অবরোধ করে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্বোচ্চার হয় । পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে । তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবশংকর ঘোষ যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন। উল্টে তিনি দাবি করেন,“ ঘটনায় তার কোন ভূমিকাই নেই। ঠিক কি হয়েছে তাও তিনি নাকি জানেন না “।বিধায়ক খোকন দাসকে ফোন করা হলে তাঁকে ফোনে পাওয়া যায় নি ।
দলের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘ঠিক কি হয়েছে জানি না । পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’ বিজেপির জেলা নেতা কল্লোল নন্দন বলেন, ‘শাসকদল দুস্কৃতিদের নিয়ে রাজনীতি করছে।তার ফল যা হবার তাই হচ্ছে ।’।