এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ দিনাজপুর,১০ জুলাই : বিদ্যুৎ দপ্তরে কর্মী নিয়োগে স্টেশন ম্যানেজারকে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা ঘুঁষ ও বিজেপি নেতাকে ফাঁষানোর ষড়যন্ত্রের প্রমান স্বরূপ ‘গোপন চিরকুট’ প্রকাশ্যে এনে তোলপাড় ফেলে দিলেন সুকান্ত মজুমদার৷ আজ বৃহস্পতিবার ওই কথিত ‘গোপন চিরকুট’ পোস্ট করেছেন তিনি । যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি এইদিন । সুকান্ত এটিকে ‘বিজেপি কার্যকর্তাদের উপর সরকারি জুলুম’ বলে অবিহিত করেছেন ।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সুকান্ত মজুমদারের শেয়ার করা ওই ‘চিরকুট’-এ লেখা আছে : “প্রিয়, জনাব মফেজবাবু আপনি যে লোক পাঠিয়েছেন কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে তাহার নিকট হইতে ৬,৫২,০০০ (ছয় লাখ বাহান্ন হাজার টাকা) বুঝিয়া পাইলাম । আপনাকে গোপন পত্র সেই ব্যক্তির হাত দিয়ে পাঠাইলাম ।
আপনার এবং এমএলএ তোরাফ হোসেন মন্ডল মহাশয়ের কথামতো বিজেপির মন্ডল সভাপতি সুশিল মাঝিকে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগের থানায় দায়ের করি ও *#* টাকা ফাইন করি । কিন্তু সুশিল মাঝি কোর্ট থেকে রায় নিয়ে আসিলেন পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাইবার জন্য । আপনি বিষয়টি দেখবেন ।’ ওই চিরকুটের একেবারের নিচে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জের রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের এসেন ম্যানেজারের স্বাক্ষর ও সিল দেওয়া আছে ।”
সুকান্ত মজুমদার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন,’এই গোপন চিরকুট রিসিপ্ট শুধু বাংলার মেধাবী যোগ্যতাসম্পন্ন যুবসমাজকে প্রতারিত করতে তৃণমূলের ‘বৃহত্তর চক্রান্ত’—এর একটি দলিল নয়, বরং একটি চাক্ষুষ প্রমাণ কিভাবে জেলায় জেলায় বিজেপি কার্যকর্তাদের উপর সরকারি জুলুম অব্যাহত রয়েছে!’
তিনি লিখেছেন,’চিরকুটের লেখা অনুযায়ী, দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার স্টেশন ম্যানেজার ‘গোপন চিরকুটে’ মফেজ বাবুকে (জেলা পরিষদের তৎকালীন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ এবং বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর সাধারণ সম্পাদক) জানাচ্ছেন — কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য তাঁর পাঠানো লোকের থেকে তিনি ৬ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছেন!
পাশাপশি — মফেজ বাবু এবং তৃণমূল বিধায়ক তোরাফ হোসেন মন্ডলের নির্দেশ মতো বিজেপির একজন সক্রিয় মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ চুরির মতো গুরুতর অভিযোগ থানা দায়ের করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আড়াই লক্ষ টাকা ফাইনও করা হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নও করা হয়েছে! কিন্তু বিজেপির সেই মণ্ডল সভাপতি আদালতে দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করার জন্য রায় নিয়ে এসেছেন। এখন স্টেশন ম্যানেজার এই বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ককে দেখতে অনুরোধ করছেন।’
সুকান্ত আরও লিখেছেন,’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং মুখ্যসচিবকে অবিলম্বে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই চিরকুটের সত্যতা জনসমক্ষে আনতে হবে। কিভাবে একটি স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং বিধায়কের সুপারিশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীর উপর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বিদ্যুৎ চুরির মিথ্যা কেস দেওয়া হয় এবং বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দফতরে টাকা পৌঁছে দিয়ে নিয়োগ করা হয় তা সামনে আসা দরকার। নাহলে এই দুর্নীতি এবং প্রতিহিংসামূলক আচরণের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেবো। যদিও বিষয়টি নিয়ে শাসকদলের প্রতিক্রিয়া এখনো প্রকাশ্যে আসেনি ।।

