দারিদ্র বাধা হয়নি, একান্ত ইচ্ছাশক্তি ও অধ্যাবসায়ের জোরে ‘মিষ্টার বেঙ্গল ‘ খেতাব অর্জন করলেন ভাতাড়ের শুভাশিষ ভট্টাচার্য

বানা রায়, এইদিন, ভাতাড় (পূর্ব বর্ধমান) ২৫ জুন  :  নিতান্ত গরিব পরিবারের সন্তান। এখনও বসবাস করেন মাটির বাড়িতে। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতাড় বাজারের বাসিন্দা ২৩ বছরের সুদর্শন তরুণ শুভাশিষ ভট্টাচার্যের উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। দুচোখে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন আর কঠোর অধ্যাবসায়ের কাছে দারিদ্র্যতা কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি। তাই রাজ্যস্তরের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় শুভাশীষ এবছর বাংলার সেরা। ‘মিষ্টার বেঙ্গল’ খেতাব তাঁর সাফল্যের ঝুলিতে। 

‘ আই – গ্লাম (I – Glam) নামে একটি মডেলিং ও গ্রুমিং সংস্থার উদ্যোগে সম্প্রতি কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয় সৌর্ন্দয্য প্রতিযোগিতা।  ওই নামী সংস্থার আয়োজনে এবছর ছিল দশম এডিশন। 

 কলকাতার সল্টলেক সেক্টর ৫ এ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। পুরুষ ও মহিলা বিভাগের জন্য পৃথকভাবে প্রতিযোগিতা হয়। এই প্রতিযোগিতায় পুরুষ বিভাগে ভাতাড় বাজারের কদমতলার বাসিন্দা শুভাশিষ ভট্টাচার্য প্রথম স্থান দখল করেছে। যেখানে পুরুষ বিভাগে মোট ২৩ জন প্রতিযোগী ফাইনাল রাউন্ডে পৌছান। পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ জেলা ছাড়াও ঝাড়খণ্ড , ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, হায়দরাবাদ এবং উত্তরপ্রদেশ থেকেও প্রতিযোগীরা এই প্রতিযোগিতায় ফাইনাল রাউণ্ডে ছিলেন।ভাতাড়ের ২৩ বছরের তরুণ তাদের সবাইকে পিছনে ফেলে নিজের দক্ষতা এবং ব্যক্তিত্বের জোরে বিজয়ীর মুকুট অর্জন করেন শুভাশিষ। চারটি রাউণ্ডে ধাপে ধাপে যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে বিচারকমণ্ডলীর চোখে বাংলার সেরার খেতাব অর্জন করেছেন শুভাশিষ। 

ছোট থেকে বেড়ে ওঠা নিতান্ত সাধারণ পরিবারে। ছোট থেকেই মডেলিংয়ের স্বপ্ন। যদিও পরিবারে অভাব নিত্যসঙ্গী। বাবা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সামান্য রাঁধুনীর কাজ করেন। মা জবাদেবী গৃহবধূ। দাদা দেবাশীষ জানান “ভাই ছোটো থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি অভিনয় ও মডেলিং নিয়ে বেশ উৎসাহী ছিলেন। তার নিষ্ঠা, জেদ এবং হার না মানা মানসিকতার কাছে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ” 

শুভাশিষ রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক পাশ করে এখন একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করছেন। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন মডেলিং, অভিনয়ের প্রশিক্ষণ। 

এবছর মিষ্টার বেঙ্গল খেতাব অর্জন করার পর  শুভাশিষের প্রতিক্রিয়া,” আমার বাবা মায়ের আশীর্বাদ, দাদার পুর্ন সমর্থনের পাশাপাশি  কৃতিত্ব দিতে চাই মেন্টর দেবযানী মিত্র ম্যাডামকে। তথা কৃতজ্ঞ পুরো আই গ্লাম টিমের কাছে।”

মিষ্টার বেঙ্গলের পাশাপাশি  তিনি ‘মিষ্টার পারফেক্ট’  এর একটি সাব টাইটেল ও অর্জন।  I-Glam এর পশ্চিমবঙ্গের ‘ব্রাণ্ড অ্যাম্বাসেডর’ হিসাবে মনোনীত করেছে সংস্থা। এরপর শুভাশিষের লক্ষ্য অনেক বড়। তার স্বপ্ন এখন মিষ্টার ইণ্ডিয়া চ্যাম্পিয়নশিপ এবং  নিজেকে একজন সফল অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। শুভাশিসের রোল মডেল হলেন শাহরুখ খান। শাহরুখ খানের সাথেও কাজ করার স্বপ্ন রয়েছে রয়েছে। তাঁর এই সাফল্যের পর অনেকেই শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিচ্ছেন। তবে হাজার প্রশংসার মাঝে আত্মসন্তুষ্টিতে হারিয়ে যেতে চান না। সরল সাদাসিধে মনের ঝকঝকে ব্যক্তিত্বের এই তরুণের চোখে এখন অনেক স্বপ্ন।।