এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২০ এপ্রিল : মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে সাম্প্রদায়িক হিংসায় ঘরবাড়ি সহ সর্বস্ব হারিয়েছে সেখানকার হিন্দুরা । এমনই ২ জনের হাতে শনিবার সন্ধ্যায় ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি নেতা স্বপন দাসগুপ্ত । ক্ষতিগ্রস্ত ওই দুই ব্যক্তি হলেন সামসেরগঞ্জের ধুলিয়ান পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বেতবোনার বাসিন্দা গণেশ ঘোষ ও একই এলাকার বাসিন্দা বিড়ি শ্রমিক ছায়া সিংহ । গনেশ ঘোষের জমানো ৫ লক্ষ টাকা পুড়িয়ে দেয় ওয়াকফ আইন বিরোধীরা । অন্যদিকে ছায়া সিংহের মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো দেড় লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায় । একটা ঝুড়িতে রাখা গনেশ ঘোষের পোড়া টাকার বান্ডিল দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্দেশে শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এর সঙ্গে ওয়াকফের কি সম্পর্ক মমতা ব্যানার্জি ?’
সামসেরগঞ্জের ধুলিয়ান পৌরসভার বাসিন্দা সর্বস্ব হারানো ওই দুই ব্যক্তির পরিচয় দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’ঘটনা ১ : সামসেরগঞ্জের ধুলিয়ান পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বেতবোনার বাসিন্দা শ্রী গণেশ ঘোষ নতুন বাড়ি তৈরী করার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন। গত শুক্রবার, ১১ ই এপ্রিল ২০২৫ তারিখে জেহাদিরা ওনার বাড়ি আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দেয়, বাড়ির আসবাবপত্র সহ পাঁচ লক্ষ টাকাও আগুনে পুড়ে যায়।
ঘটনা ২ : সামসেরগঞ্জের ধুলিয়ান পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বেতবোনার বাসিন্দা শ্রীমতী ছায়া সিংহ, মেয়ের বিয়ের জন্য দেড় লক্ষ টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন। একই ভাবে ওনার বাড়িতেও অগ্নি সংযোগ করা হয়। মেয়ের বিয়ের জন্য গচ্ছিত টাকা ও গয়না লুঠ করা হয়।’
তিনি লিখেছেন,’প্রান্তিক গণেশ ঘোষের এবং ছায়া সিংহের পরিবারের সাথে ওয়াকফ এর কোনো সম্পর্ক ছিল না, তারা হিন্দু, শুধুমাত্র এই অপরাধেই তাদের উপর এই অত্যাচার হয়েছে। আজ কলকাতায় আইসিসিআর ভবনে ‘খোলা হাওয়ার’ পক্ষ থেকে গণেশবাবু এবং শ্রীমতী ছায়া সিংহের হাতে পাঁচ লক্ষ এবং দেড় লক্ষ টাকা তুলে দিলাম। আমরা হিন্দুদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’মমতার টাকা ওরা নেবে না। আমরা প্রত্যেক হিন্দুকে খাড়া করব৷ প্রত্যেক হিন্দুর বাড়ি, মন্দির, দোকান যা গেছে কোন সরকারি সাহায্য লাগবে না । আমরাই করে দেব । প্রত্যেককে ধরে ধরে আমরা ক্ষতিপূরণ দেব । পাকা ঘর গেছে, পাকা ঘর করে দেবো । খাট পুরিয়েছে, খাট কিনে দেবো । টিভি ভেঙ্গেছে, টিভি কিনে দেবো । জটার ছাগল, গরু লুট করেছে তার থেকে বেশি কিনে দেবো । যত টিন খুলেছে লাগিয়ে দেবো । যটা অ্যাসবেস্টস ভেঙেছে তৈরি করে দেব । সব করে দেব । এখন করে দেবো আর ২৬-এ বিজেপি ক্ষমতায় এলে দাঙ্গাবাজদের বাড়িতে বুলডোজার চালিয়ে ১২ শতাংশ সুদসহ আদায় করব । মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়৷’
তার আগে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, সামসেরগঞ্জ সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বাঙালি হিন্দুদের উপর সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রতিবাদে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার ডাকে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরে মহামিছিল ও পথসভায় যোগ দেন বিরোধী দলনেতা । পথসভায় তিনি বলেছেন,’সিপিএমের সেকুলারিজম আর মমতার তোষণ, আগের ৩৪ এখনকার ১৪, এই আটচল্লিশ বছরে ৯,০০০ গ্রামে শাঁখ বাজেনা, দীপ জ্বলে না, তুলসী মঞ্চ নেই । এর কারণ এটাই, হিন্দু ভাগাও জমি কেনো বেঘর করো ।’ তিনি ফের বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদের সংখ্যালঘু হিন্দুদের হাতে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেওয়া এবং অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আবেদন জানান ।।

