এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৩ এপ্রিল : বাংলাদেশের সাভারে নিখোঁজ হওয়া মহম্মদ সাজ্জাদ ইসলাম সবুজ (২৬) নামে এক যুবকের ৯ খণ্ডিত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (পিবিআই)। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রোকনুজ্জামান পলাশ (২৬) ও তার কথিত স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার তৃষা (২৬)। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ।
নিহত সবুজ একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ৩ এপ্রিল ভোরে তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। পরিবার বহু চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পায়নি এবং ৪ এপ্রিল সাভার মডেল থানায় নিখোঁজ ডাইরি করা হয়। একদিন পর কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত স্থান থেকে দুটি কার্টনে মোড়ানো অজ্ঞাত খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর মৃতদেহের ছবি দেখে নিহতের পরিবার তার পরিচয় শনাক্ত করে।
পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা তদন্তকারী দল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সবুজের পরিচয় নিশ্চিত করে এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই আসামি—রোকনুজ্জামান পলাশ ও সুমাইয়া আক্তার তৃষাকে চিহ্নিত করে। পলাশ তার খালুর বাড়িতে আত্মগোপন করলেও সুমাইয়া ফেনীতে পালিয়ে যায়। তাদের ভারতে এসে আত্মগোপন করার পরিকল্পনা ছিল, তবে পিবিআইয়ের নজরদারি ও তদন্তের মাধ্যমে তাদের পালানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সুমাইয়াকে ঢাকার গাবতলী থেকে অনুসরণ করে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে গ্রেফতার করা হয়।
পিবিআই জানায়, সবুজ ও সুমাইয়ার মধ্যে ফেইসবুকে ফেইক আইডি ব্যবহার করে অশ্লীল এবং নগ্ন ছবি আদান-প্রদান শুরু হয়। এক পর্যায়ে, এই সম্পর্কের দ্বন্দ্বের ফলস্বরূপ মহম্মদ সাজ্জাদক্ব হত্যার পরিকল্পনা করে এবং হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। ধৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে সবুজের ব্যবহৃত আইফোন, হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, একটি কার্টন এবং মৃতদেহ বহনকারী গাড়ি উদ্ধার করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এক ভ্যানচালক কামরুলও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন । হত্যাকাণ্ডটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে, তবে পিবিআইয়ের তদন্ত দল এটিকে একটি ভয়াবহ সামাজিক দ্বন্দ্বের ফল হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যা অনলাইনে সম্পর্কের সূত্রে খুনের রূপ নিয়েছে।।

