প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ ফেব্রুয়ারী : খেলতে খেলতে প্লাস্টিকের কলমের পেনের বড় ঢাকনা গিলে ফেলেছিল শিশু । নতুন কৌশলে সেই ঢাকনা শিশুর গলা থেকে বের করে শিশুটির প্রাণ বাচালেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাক কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসকরা। শিশুটি এখন বিপন্মুক্ত ।
বর্ধমান হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে,বছর সাত বয়সী শিশুটির নাম বাবুলাল হোসেন। হুগলীর দেবখণ্ডে তাঁদের বাড়ি।আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরামবাগ হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।চিকিৎসকরা জানতে পারেন একটি পেনের ঢাকনা নিয়ে খেলতে খেলতে শিশুটি সেটি মুখে ঢোকায় । কোনও ভাবে সেই পেনের ঢাকনাটি শিশুটির ফুসফুসের বাম দিকে গিয়ে আটকে যায়।
বর্ধমান হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ’এই ঘটনায় শিশুর বাম ফুসফুস ক্রমশই অকেজো হয়ে পড়ছিল। এই অবস্থায় তাঁরা প্রথম ব্রঙ্কোস্কোপি করেন। কিন্তু পেনের ঢাকাটি আকারে বড় হওয়ায় এটি বেরিয়ে আসেনি। এরপর তাঁরা ট্র্যাকিওস্টোমি করেন এবং ট্র্যাকিওস্টোমির মাধ্যমে অনুনাসিক এণ্ডোস্কোপ এবং এফ.বি. অপসারণ পদ্ধতিতে ঢাকাটি বার করে আনতে সক্ষম হন। বর্তমানে শিশুটি বিপদমুক্ত এবং সুস্থ রয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
হাসপাতালের সুপার ডাক্তার তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, পেনের ঢাকনাটি শিশুটির ফুসফুসে যে ভাবে আটকে ছিল তাতে তার জীবন সংশয় হতে পারত। ফুসফুস ওপেন করে অপারেশন না করে গলায় একটি ছোট ছিদ্র করে বিকল্প পদ্ধতিতে অপারেশন করে পেনের ঢাকনাটি বার করেছেন চিকিৎসকরা। তিনজন শল্যচিকিৎসক এবং দু’জন অজ্ঞান করার চিকিৎসক মিলে এই কাজটি করেছেন।তাপসবাবু আরও জানান,এমন অপারেশন সরকারি হাসপাতালে প্রথম বলাযায় । এই অভিজ্ঞতার কথা আরো ছড়িয়ে দিয়ে আরো কিছু জীবন বাঁচানো সম্ভব বলে তাঁদের ধারণা। শিশুটির মা আয়েষা বেগম বলেন,’আমার ছেলে অপারেশনের পর পাঁচদিন আইসিইউতে ছিল। এখন সে ভাল আছে। বর্ধমান হাসপাতালের ডাক্তারবাবুরা দারুণ ভাবে চিকিৎসা করে আমার ছেলের প্রাণ বাঁচিয়েছেন ।’।

