এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৪ অক্টোবর : বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন কুন্ডুবাড়ি মেলা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে দিল ইসলামি জিহাদিরা । মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুরের কুন্ডু বাড়িতে কালীপূজার সময় আয়োজন করা এই দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী এই মেলা ২০২৪ সাল থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে এলাকায় ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছে স্থানীয় মুসলিমরা । ব্যানারে লেখা হয়েছে, ‘এ বছর(২০২৪) থেকে কুন্ডু বাড়ির মেলা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হল । বাস্তবায়নে সর্বস্তরের জনগন ।’ আজ বৃহস্পতিবার ভরা বাজারে টাঙানো ওই ব্যানার দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে স্থানীয় হিন্দুরা ।
মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুরের কুন্ডু বাড়িতে দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী মেলা প্রতিবছর কালিপূজা ও দিপাবলী উপলক্ষ্যে আয়োজন করে আসা হচ্ছে । প্রায় ২৫০ বছর ধরে দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহি এই মেলাটি ‘কুন্ডু বাড়ির মেলা’ নামে পরিচিত। মেলাতে প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কাঠের আসবাবপত্র নিয়ে ভিড় জমান বহু ব্যবসায়ী । মাদারীপুরসহ বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল জেলার বিভিন্নস্থান থেকে হাজার হাজার লোকের ঢল নামে এ মেলায়।
কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুরের কুন্ডু বাড়িতে ১৭৮৩ সালের নভেম্বরে দিপাবলী ও শ্রীশ্রী কালিপূজা উপলক্ষ্যে দীননাথ কুন্ডু ও মহেশ কুন্ডু এই মেলার প্রবর্তন করেন। তাই কুন্ডুদের বংশের নামানুসারে এই মেলা নাম করন করা হয় কুন্ডবাড়ির মেলা। এই সময় দিপাবলীর পরের দিন এই অঞ্চলের বিভিন্ন কালি প্রতিমা জড়ো করা হত। এর মধ্যে যাদের প্রতিমা সর্বাধীক থেকে সেরা হতো তাদের পুরস্কার প্রদান করা হত। সেই সময় চিত্তবিনোদনের জন্য পুতুল নাচ, কবিগান, জারি গান, পালাগান, নৌকাবাইচের আয়োজন করা হত। কালের বিবর্তনে পালাগান জারি গান, নৌকা বাইচ বন্ধ থাকলেও নাগর দোলার আয়োজন এখনো আছে। বংশপরম্পরায় প্রতি বছর এই মেলা আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেলা বসে।
শুধু কুন্ডবাড়ি জুড়ে নয় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালপুর এলাকার দুপাশে বসে শত শত দোকান। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসে। কাঠের বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্রের জন্য এই মেলা বিখ্যাত। মেলায় মাদারীপুর ছাড়াও ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাট, মাগুরা, যশোর, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা তাদের মাটির, বাঁশের ও কাঠের তৈরি বিভিন্ন মালামাল ট্রাকযোগে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে।
পূজা উৎযাপন কমিটির উপদেষ্টা বাসু দেব কুন্ড বলেন, দিপাবলী ও শ্রীশ্রী কালিপূজা উপলক্ষ্যে আমাদের পূর্ব পুরুষরা মাত্র ৪ একর জমির উপর এই মেলার আয়োজন করেন। পরে ধীরে ধীরে এই মেলার আকৃতি আরও বড় হয়ে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরে। প্রতি বছর এই মোলায় কমপক্ষে ৭-৮ কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি হয় বলে তিনি জানান । এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস ইসলামি জঙ্গিদের কাছে মাথা নত করে মেলা বন্ধের স্বীকৃতি দেন,নাকি মেলা চালু রাখতে উদ্যোগী হন ।।