এইদিন ওয়েবডেস্ক,মস্কো,২২ অক্টোবর : আজ থেকে রাশিয়ার কাজান শহরে ১৬ তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে এই কনভেনশনে অংশ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীও। জি-৭ এর মতো প্রভাবশালী দলের তুলনায় ব্রিকস-এর ইতিহাস খুব একটা পুরনো নাও হতে পারে, কিন্তু এই শীর্ষ সম্মেলনে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে যা ভবিষ্যতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। যার মধ্যে একটি হল ব্রিকস মুদ্রা।
ব্রিকস নয়টি দেশের একটি গ্রুপ। এই নয়টি দেশের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, চীন, মিশর, ইথিওপিয়া, ভারত, ইরান, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিকস দেশ একটি রিজার্ভ কারেন্সি চালু করতে চায় যা ডলারের আধিপত্যের অবসান ঘটাতে পারে। আজ ২২ থেকে ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় ব্রিকস সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় মার্কিন ডলারের প্রাধান্য রয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ মার্কিন ডলারে হয়। এখন পর্যন্ত, তেলের লেনদেনের ১০০ শতাংশ শুধুমাত্র মার্কিন ডলারে হয়েছিল, কিন্তু গত বছর, যেমন রিপোর্ট করা হয়েছে, কিছু তেলের লেনদেন অ-মার্কিন ডলারেও হতে শুরু করেছে। এছাড়া চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং চীন ও রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে যদি ব্রিকস দেশগুলো এই নতুন মুদ্রার ব্যাপারে একমত হয়, তাহলে তা আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি এই সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক শক্তিও বাড়াতে পারে।
সাম্প্রতিক বৈশ্বিক আর্থিক চ্যালেঞ্জ এবং আগ্রাসী মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কারণে ব্রিকস দেশগুলির একটি নতুন মুদ্রার প্রয়োজন। যার কারণে মার্কিন ডলার ও ইউরোর ওপর বিশ্বব্যাপী নির্ভরতা কমতে পারে। ২০২২ সালে ১৪ তম ব্রিকস সম্মেলনের সময় এই নতুন মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রথম আলোচনা করা হয়েছিল। এর পরে, ২০২৩ সালের এপ্রিলে, ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাও ব্রিকস মুদ্রা প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিলেন।
কেন ব্রিকস দেশগুলো নতুন মুদ্রা চায় ?
ব্রিকস মুদ্রা কীভাবে মার্কিন ডলারকে প্রভাবিত করবে?
মার্কিন ডলার একতরফাভাবে কয়েক দশক ধরে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছে। ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের মতে, ১৯৯৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৯৬% ডলারে, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ৭৪% বাণিজ্য এবং বাকি বিশ্বের ৭৯% বাণিজ্য মার্কিন ডলারে ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরো ও ইয়েনে আর্থিক লেনদেনও হচ্ছে। কিন্তু এখনও ডলার বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মুদ্রা। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি ব্রিকস দেশগুলো বাণিজ্যের জন্য ডলারের পরিবর্তে নতুন ব্রিকস মুদ্রা ব্যবহার শুরু করে, তাহলে তা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। যার কারণে ডলারের প্রভাব দূর হতে পারে। তাতে বিশ্বে আমেরিকার দাদাগিরিও বন্ধ হয়ে যাবে ।।