এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৯ সেপ্টেম্বর : তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জমানায় যে পরিমান রেশন সামগ্রীর দুর্নীতি হয়েছে তা শুধু রাজ্য নয়, ভারতের ইতিহাসে একটা বিরল দুর্নীতির মামলা । ওই বিপুল অঙ্কের দুর্নীতির টাকা হাতবদল করতে রীতিমতো পরিকল্পনা ফেঁদে ছিলেন ‘গভীর জলের মাছ’ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানরা । রেশন দুর্নীতির দুই কিংপিনের সাগরেদ আনিসুর রহমান ও আলিফ নূরের মাধ্যমে এক হাজার কোটির আর্থিক লেনদেনের হদিশ পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি) । ইডি এমন ৩৫০ এর বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে যার মাধ্যমে দুর্নীতির টাকা হাতবদল হত । শনিবার মেট্রো পলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে জমা দেওয়া তৃতীয় চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে ইডি । তিন হাজার পাতার নথিসহ ১৫৭ পৃষ্ঠার তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ স্থানীয় নেতার কর্মকাণ্ডের ইতিবৃত্ত তুলে ধরেছে ইডি ।
দেগঙ্গার ব্যবসায়ী দুই ভাই আনিসুর ও আলিফ হল জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের আত্মীয় । তদন্তে ইডি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমানের সঙ্গে ওই দু’জনের আর্থিক সম্পর্কের হদিশ পেতেই গত ২ আগস্ট গ্রেফতার করে । তার আগে আনিসুর ও আলিফের বাড়ি, ধান ও চালকলে অভিযান চালায় ইডি । এর আগে রাজ্যের রেশন দুর্নীতির তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর লাগাতার অভিযান চালিয়ে ৩৫০ এর বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পায় তদন্তকারী দল । যার মাধ্যমে ১,০০০ কোটি টাকা হাতবদল হয়েছিল বলে চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি । আর লেনদেনের পুরো হিসাব রাখার দায়িত্ব ছিল আনিসুর ও আলিফের উপর । এই চক্রে যুক্ত দুই রেশন ডিস্ট্রিবিউটার ও চারটে সংস্থার নাম চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে ।
রেশন দুর্নীতি কান্ডে চলতি মাসে অভিযুক্ত-বাকিবুর রহমান,বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রধান শংকর আঢ্য এবং বিশ্বজিৎ দাসকে পঞ্চাশ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল ইডির বিশেষ আদালত । যাতে ইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল । কারন আদালত জানায় যে ইডি ধৃতদের বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতিতে জড়িত থাকার পর্যাপ্ত প্রমাণ দিতে পারেনি । যদিও এবারে এবার তাদের জামিন খারিজের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছে ইডি। আগামী সপ্তাহে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানির কথা রয়েছে ।।