এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২০ সেপ্টেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় গ্রাহকদের অজান্তেই তাদের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে । এই ‘ভুতুড়ে’ আর্থিক লেনদেনের ঘটনায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার ভাতার বাজার এলাকার বাসিন্দা মিলন খাঁ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ভাতার বাজারের বাসিন্দা অয়ন ঘোষ নামে এক যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে ভাতার থানার পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে । ধৃত ব্যক্তি জমি -জায়গার দাদালির ব্যবসার সাথে যুক্ত বলে জানা গেছে । বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গ্রেফতারের পর আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ । পুলিশ জানতে পেরেছে যে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় বেশ কয়েকজন গ্রাহক মিলে তিন কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছে। এত বিপুল টাকার উৎস কি? কে বা কারাই বা রয়েছে এই বেআইনি লেনদেনের পিছনে ? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ভাতার থানার পুলিশ । এদিকে এই ‘ভুতুড়ে’ আর্থিক লেনদেনে ওই ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজারেরও নাম জড়িয়েছে বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুর এলাকায় রয়েছে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখাটি। অয়ন ঘোষের দাবি, ঋণ নেওয়ার জন্য মিলন খাঁ ও তার পরিচিত লাভজিৎ সিং নামে এক ব্যক্তির কথামত তিনি ওই শাখায় একটা অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন । যদিও তিনি ঋণ পাননি। কিন্তু তিনি পরে জানতে পারেন যে তাঁর অজান্তেই ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এরপরেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। এর মাস পাঁচেক আগে ওই ব্যাঙ্কের শাখার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন ভাতারের আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা শেখ সাদ্দাম নামে এক ব্যবসায়ী । ব্যঙ্কের ম্যানেজার সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তিনি তার দোকানে পরিদর্শনেও এসেছিলেন । একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট চালু করার জন্য তাঁর কথামতো আধার কার্ড,প্যানকার্ড সহ জরুরি কাগজপত্র জমা দেন তিনি । কিন্তু অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছে কিনা জানতেন না । এরপর গত এপ্রিল মাসে ব্যাঙ্ক থেকে বিমার প্রিমিয়াম জমা দিতে বলে ফোন আসে। তখন শেখ সাদ্দাম ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্টে কয়েক দফায় প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার ভুতুড়ে লেনদেন হয়েছে ।
সাদ্দাম আদালতে অভিযোগ জানানোর পর সেই মামলার তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয় । বর্ধমান সি আই(এ) শৈলেন্দ্র উপাধ্যায় এই মামলার তদন্ত করছেন । প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে এই ‘ভুতুড়ে’ লেনদেনের নেপথ্যে রয়েছেন লাভজিৎ সিং । ধৃত মিলন খাঁয়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে লাভজিৎ সিংয়ের। বর্তমানে তিনি বিদেশে রয়েছেন । পুলিশের সন্দেহ যে এই বিপুল পরিমান হিসাব বহির্ভূত আর্থিক লেনদেনের পিছনে ওই ব্যাঙ্কের আরও কেউ যুক্ত রয়েছে । এই বেআইনি লেনদেনে কোনো বিদেশী রাষ্ট্রের যোগসূত্র আছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।।