এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৮ সেপ্টেম্বর : প্রকাশ্য দিবালোকে চলন্ত যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে সকলের সামনে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে জবাই করা ঘাতক যুবক ইজাজুল হক ওরফে বাবু শেখ পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে । মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কেতুগ্রাম থানার কুমোরপুরের কাছে চলন্ত বাসের মধ্যে আরসিদা খাতুন (১৫) ওরফে জ্যোতিকে জবাই করে বাস থেকে ঝাঁপ দিয়ে মাঠে মাঠে ছুটে পালিয়ে যায় ইজাজুল হক । পুলিশ তার সন্ধানে তল্লাশি অভিযান শুরু করে । শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার গভীর রাতে কুমোরপুরের মাঠ থেকে তাকে পাকড়াও করে পুলিশ । আজ বুধবার ঘাতক যুবককে কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । পুলিশ সূত্রে খবর,প্রাথমিক জেরায় ঘাতক ইজাজুল হক জানিয়েছে যে চারবছর ধরে জ্যোতির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল । কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় । তার প্রেমের প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করছিল জ্যোতি । তাই প্রতিশোধ নিতে সে জ্যোতিতে জবাই করে খুন করেছে।
কাটোয়া থানার হরিপুর গ্রামে বাড়ি আরসিদা খাতুন ওরফে জ্যোতির । কাটোয়া ডিডিসি গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল সে । অন্যদিকে ঘাতক যুবক বাবু শেখ একই এলাকার বাসিন্দা । সে কেরলায় পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করত । মাস ছয়েক আগে বাড়ি ফিরে আসে । তখন থেকেই গ্রামেই ছিল সে । মৃতা কিশোরীর পরিবার জানিয়েছে,বাড়ি ফেরার পর থেকেই সে জ্যোতির পিছু নেয়। স্কুল, টিউশন যেখানেই জ্যোতি যেত সেখানেই চলে যেত বাবু শেখ ।
ঘটনার দিন দুয়েক আগে কেতুগ্রাম থানার আন্না গ্রামে তার মাসির বাড়িতে এসেছিল জ্যোতি । মঙ্গলবার দুপুরে মাসি শম্পা বিবি ও পাঁচ বছরের মাসতুতো ভাইয়ের সঙ্গে কাটোয়ায় বাড়ি ফিরছিল সে । এদিকে বাবু শেখ যে জ্যোতিকে অনুসরণ করতে করতে একই বাসে চড়েছে সেটা কেউ খেয়াল করেনি । বাসের প্রথম গেটের পর দ্বিতীয় সিটে জানালার ধারে বসেছিল জ্যোতি । তার পাশেই ছেলেকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন মাসি শম্পা বিবি। কুমোরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসটি ছেড়ে যেতেই একটি ইঁইভাটার সামনে বাসটি দাঁড়ালে কালো প্যান্ট ও সাদা জামা পরে বাসে ওঠে ঘাতক যুবক বাবু শেখ । তারপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে পোশাকের মধ্যে লুকিয়ে রাখা একটা ধারাল ছুরি বের করে জ্যোতির শ্বাসনালী দু’ফালা করে দিয়ে পিছনের গেট দিয়ে চলন্ত বাস থেকে সে লাফিয়ে নেমে পড়ে । নিহত কিশোরীর মাসির চিৎকারে বাস দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর অনান্য যাত্রীরা বাবু শেখকে ধরার চেষ্টা করে । কিন্তু সে ধান জমি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় । যদিও গভীর রাতে ওই এলাকার মাঠ থেকেই ঘাতক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ ।।