এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৭ সেপ্টেম্বর : সাড়ে ৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণের মত ন্যাক্কারজনক কাজ করার পর ঘন ঝোপের মধ্যে আত্মগোপন করেছিল ধর্ষক । তাতেও সে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে পারেনি । ড্রোন ক্যামেরা এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘ড্রাগন লাইট’-এর সাহায্য সাহায্যে খর্বাকৃতির চরণ মাঝি (৪২) ওরফে সেমন্তর উপস্থিতির টের পেয়ে যায় । শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার বিকেহাটের ওই জঙ্গল এলাকা থেকেই ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত চরণ। আজ শনিবার ধৃতকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয় । একজন দুধের শিশুর সঙ্গে এই প্রকার ঘৃণ্য কাজ করায় অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি করেছে নির্যাতিতার পরিবার ।
কাটোয়ার বিকেহাট এলাকায় বাড়ি অভিযুক্ত চরণ মাঝির । কাটোয়ার আলমপুর পঞ্চায়েত এলাকায় তার দিদির শ্বশুরবাড়ি । সেখানেই অন্তঃসত্ত্বা দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া ঘরে থাকত চরণ । গ্রামে ঘুরে ঘুরে ঠেলাগাড়িতে করে ভুট্টা পুড়িয়ে বিক্রি করত সে । ওই গ্রামেই বাড়ি নির্যাতিতা শিশুকন্যার । তার বাবা কলকাতায় মিষ্টির দোকানে কাজ করেন । বাড়িতে রয়েছে আড়াই বছরের ভাই,মা, ঠাকুমা ও দাদু । শিশুটির মা, ঠাকুমা ও দাদু জনমজুরের কাজ করেন ।শুক্রবার সকালে ঠাকুমার সঙ্গে রেশন দোকানে গিয়েছিল শিশুটি । রেশন তুলে ঠাকুমা মাঠে কাজে চলে যান । শিশুটি বাড়িতে খেলাধুলা করছিল । সেই সময় তাকে ভুট্টা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে চরণ তার উপর পাশবিকঅত্যাচার চালায় । অন্য একটা ঘরে বিশ্রাম করছিল চরণের স্ত্রী । তিনি কিছুই টের পাননি । পরে পরিবারের লোকজন খোঁজ করতে গিয়ে চরণের ঘর থেকে শিশুটিকে রক্তাক্তবস্থায় বেরিয়ে আসতে দেখে । দ্রুত মেয়েটিকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । দশটি সেলাই দিতে হয় তাকে । বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে আছে ।
এদিকে কুকর্ম করার পর চম্পট দেয় অভিযুক্ত । পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়েরের আগেই চরণ মাঝির সন্ধানে নেমে পড়ে পুলিশ । পরে অভিযোগ দায়ের হলে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি । শেষ পর্যন্ত অপকর্ম ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রায় ১৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত । কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি এবং কাটোয়া থানার আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ড্রোন ও ‘ড্রাগন লাইট’ এর সাহায্য তল্লাশি চালানোর সময় বিকেহাটের ঝোপঝাড়ের মধ্যে খর্বাকৃতি চরণ মাঝির উপস্থিতি টের পেয়ে যায় ।
পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাহুল পাণ্ডে বলেন, ‘পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলেন্টিয়ার মিলে শতাধিক কর্মী অভিযুক্তকে ধরতে তল্লাশি শুরু করেছিল । শেষ পর্যন্ত শুক্রবার গভীর রাতে কাটোয়ার বিকেহাট জঙ্গল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।’ ধৃতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন ।।