এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৩ আগস্ট : গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে বাজারের এক ব্যবসায়ী । আজ শুক্রবার ভোর প্রায় ৫ টা নাগাদ বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের উপর বেলেন্ডা পুল থেকে কিছুটা দূরে একটা গাছের ডালের সঙ্গে তাকে ঝুলতে দেখে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ৷ পরে খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় । মৃত ব্যক্তিকে বাবু চন্দ্র (৪৫) বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ । ভাতার বাজারের সন্তোষসায়ের পাড়ের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি বিদুৎ লাইনের মেরামতির কাজ করতেন । এদিকে ওই ব্যবসায়ীর আত্মহত্যার কারন নিয়ে ধন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে । তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি যে স্থানীয় এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে অনেক ধারদেনা হয়ে যাওয়ার কারনেই এই প্রকার চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী । যদিও এনিয়ে থানায় নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি । পুলিশ একটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
জানা গেছে,ভাতার বাজারের সন্তোষসায়ের পাড়ের বাসিন্দা বাবু চন্দ্ররা তিন ভাই । বাবু ছোট । বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বিধবা মা ও দুই দাদার পরিবার । দুই দাদা একই পরিবারে পৃথক সংসারে থাকেন। অবিবাহিত বাবু বড় দাদার কাছে থাকতেন । বাড়ির কিছুটা পাশে একটা দ্বিতল ভবনের নিচের একটা ঘরে বিদ্যুৎ লাইনের বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান রয়েছে তার । রাতে খাওয়া দাওয়ার পর দোকানে ঘুমতে যেতেন তিনি ।
মৃত ব্যক্তির ভাইপো সুমিতের কথায়,’বৃহস্পতিবার রাতেও আমার কাকা যথারীতি খাওয়া দাওয়া সেরে দোকানে ঘুমতে চলে যান । সকালে হঠাৎ থানা থেকে খবর আসে যে আমার কাকা আত্মঘাতী হয়েছেন । তৎক্ষণাৎ আমরা থানায় ছুটে যাই । সেখানে গিয়ে কাকার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখি ।’
জানা গেছে, প্রাতভ্রমণের অভ্যাস ছিল ওই ব্যবসায়ীর । রোজ ভোর প্রায় চারটে নাগাদ তিনি বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক ধরে পায়ে হেঁটে প্রাতভ্রমণে যেতেন । কিন্তু আজ সাইকেলে চড়ে বের হয়েছিলেন তিনি । পরে বেলেন্ডা পুল মোড়ের কাছে তার সাইকেল পড়ে থাকতে দেখা যায় ৷ সেখান থেকে কিছুটা দূরে তাকে একটা গাছের ডালের সঙ্গে গলায় দড়ির ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির কথায়,’স্থানীয় এক ভাড়াটিয়া বিবাহিত মহিলার সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বাবু চন্দ্র । প্রেমিকার চাহিদা পূরণ করতে কয়েক লাখ টাকা দেনাও হয়ে যায় তার । আত্মহত্যার আগে বৃহস্পতিবার অনেক দেনা তিনি পরিশোধও করে গেছেন । কিন্তু প্রেমিকার ক্রমাগত চাহিদা পূরণ করতে না পেরেই তিনি এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ওই ব্যক্তি ।’ পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে । মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ ।।