এইদিন ওয়েবডেস্ক,লখনউ,২০ জুলাই : সাম্প্রতিক সময় ধরে কিছু ভিডিও প্রকাশ্যে আসছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ৷ সেই সমস্ত ভিডিওগুলির কোনোটিতে রুটি বানানোর সময় থুতু দিতে দেখা গেছে । কোথাও ফল ও মিষ্টিতে প্রস্রাবও করতে দেখা যায় । এমনকি হিন্দু নামে দোকান খুলে খাদ্যে গোমাংশ পর্যন্ত ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে কোনো কোনো জায়গা থেকে । উত্তরপ্রদেশের এমন বহু দোকান আছে, যে দোকানের নাম হিন্দুর নামে রাখা হলেও তার মালিক আদপে একজন মুসলিম,এমনকি কর্মচারীরা পর্যন্ত মুসলিম । এই কারনে দোকানে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের নাম লেখার দাবি উঠছিল । অবশেষে সেই দাবি মেনে কানওয়ার যাত্রার আগে(শিবের জলাভিষেক যাত্রা) এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ । রাজ্য জুড়ে দোকানগুলিতে ব্যবসায়ীর নাম লেখার নির্দেশে দিয়েছেন তিনি । তাঁর এই আদেশ সমগ্র রাজ্যের কানওয়ার যাত্রা রুটে প্রযোজ্য হবে। পাশাপাশি এসব রুটে হালাল পণ্য বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে । উত্তরাখণ্ডেও ইউপি-র মতো একই আদেশ জারি করা হয়েছে । এতে বেজায় চটেছে তথাকথিত সেকুলার ও বামপন্থীরা ।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে সমস্ত কানওয়ার রুটে দোকান পরিচালনাকারীর নাম এবং পরিচয় একটি প্লেটে লিখতে হবে। এটি কানওয়ার বহনকারীদের খাদ্য ও পানীয়ের বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নির্দেশ দিয়েছেন যে কেউ হালাল প্রত্যয়িত পণ্য বিক্রি করবেন না। যেই এই কাজ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে উচিত। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে হালাল প্রত্যয়িত পণ্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও নির্দেশ দিয়েছেন যে শ্রাবণ মাসে রাজ্যের শহরাঞ্চলে আলো এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য বিশেষ যত্ন এবং ব্যবস্থা নিতে হবে । এছাড়াও কানওয়ার রুটে বিশুদ্ধ জল ও পানীয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
এটি উল্লেখযোগ্য যে এর আগে মুজাফফরনগর পুলিশ জেলার কানওয়ার রুটে নামগুলি প্রদর্শনের বিষয়ে একটি আদেশ দিয়েছিল ।মুজাফফরনগর পুলিশ পরে স্বেচ্ছায় নামগুলি প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়। এখন যোগী সরকার এই ব্যবস্থা পুরো রাজ্যে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে কানওয়াড়িরা কোনও সমস্যায় না পড়ে এবং তারা তাদের পছন্দের জায়গা থেকে খাওয়া-দাওয়া করার স্বাধীনতা পায়।
উত্তরাখণ্ডে, প্রচুর সংখ্যক কানওয়াদিয়া হরিদ্বারে জল ভরতে আসে। হরিদ্বারের এসএসপি নির্দেশ দিয়েছেন যে জেলার সমস্ত কানওয়ার রুটে দোকানদারের নাম এবং পরিচয় স্পষ্টভাবে লিখতে হবে। হরিদ্বারের এসএসপি প্রমেন্দ্র ডোবাল এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে জেলার মধ্যে যে সমস্ত খাবার-হোটেল, ধাবা বা স্টল স্থাপিত হয়েছে তাদের মালিকের নাম, কিউআর কোড এবং মোবাইল নম্বর উল্লেখ করতে হবে। কেউ এই আদেশ না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হরিদ্বারের এসএসপি বলেছেন যে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কারণ বিগত বছরগুলিতে এই নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। তিনি বলেন, কেউ পরিচয় গোপন করলে তার দোকান উচ্ছেদ করা হবে।
সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা ভাদ্রা ও বামপন্থীরা ইউপি ও উত্তরাখণ্ড সরকারের এই নির্দেশে ক্ষুব্ধ হয়েছে । প্রিয়াঙ্কা ভাদ্রার প্রতিক্রিয়া, ‘এই বিভাজনকারী আদেশ আমাদের সংবিধান এবং আমাদের ভাগ করা ঐতিহ্যের উপর আক্রমণ । অবিলম্বে এই আদেশ প্রত্যাহার করুন ।’।