এইদিন ওয়েবডেস্ক,৩০ জুন : ফের মহিলার উপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গে । একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । ভিডিওতে দেখা গেছে হলুদ-শাদা শালোয়ার কামিজ পরা একজন ভীতিসন্ত্রস্ত মহিলা মাটিতে বসে আছেন । মহিলার পাশে হাঁটু মুড়ে বসে আছেন প্যান্ট-শার্ট পরা এক ব্যক্তি । তাদের মাঝে এক গোছা কাঁচা কঞ্চি হাতে দাঁড়িয়ে আছে প্যান্ট ও কালো গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি । তাদের গোল হয়ে ঘিরে আছে জনতা । কঞ্চি হাতে ব্যক্তিটি মহিলার পাছা ও পায়ের উপরিভাগে নির্মমভাবে পেটাচ্ছে । যন্ত্রায় চিৎকার করতে করতে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন ওই মহিলা । মহিলাকে তার পাশে বসে থাকা পুরুষকে কঞ্চি দিয়ে বেদম পেটায় কালো গেঞ্জি পরা ব্যক্তি । মারধরে আক্রান্ত ব্যক্তি লুটিয়ে পড়লে ফের সে মহলাকে কঞ্চি দিয়ে পিটিয়ে,লাথি মেরে এবং চুল ধরে ঠেলে ফেলে দিয়ে শাসায় । আর মহিলা বা ওই পুরুষকে উদ্ধার করার পরিবর্তে কার্যত ‘তামাসা’ দেখে জনতা । বেশ কিছুক্ষণ পাশবিক অত্যাচার চলার পরে ‘ইনসাফ’ করা ব্যক্তির হাত থেকে কঞ্চির গোছা কেড়ে নেয় । যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এইদিন ।
ভিডিওটি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য । তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির শাসনের কুৎসিত চেহারা। ‘ইনসাফ’ সভার মাধ্যমে দ্রুত বিচার দেওয়ার জন্য বিখ্যাত এবং চোপড়া বিধায়ক হামিদুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী । টিএমসি পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গে শরিয়া আদালতের বাস্তবতায় ভারতকে জেগে উঠতে হবে। প্রতিটি গ্রামে একটি সন্দেশখালি রয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মহিলাদের জন্য অভিশাপ ৷ বাংলায় আইনশৃঙ্খলার কোনও আভাস নেই৷ মমতা ব্যানার্জি কি এই দানবের বিরুদ্ধে কাজ করবেন নাকি শেখ শাহজাহানের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাকে রক্ষা করবেন? স্থান- লক্ষ্মীকান্তপুর, চোপড়া, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ।’
জানা গেছে,আক্রান্ত মহিলা চোপড়া থানার লক্ষ্মীকান্তপুর গ্রামেরই গৃহবধূ । বধূর পাশাপাশি প্রহৃত ব্যক্তি তার প্রেমিক । তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ । তাদের শাস্তি দেওয়া ব্যক্তি এলাকায় ‘জেসিবি’ নামে পরিচিত । সে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী । বধূর সাথে ওই ব্যক্তির পরকীয়া সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে গ্রামে সালিশিসভা বসে । সালিশিসভার বিচারক ছিলেন তৃণমূলের বাহুবলি নেতা ‘জেসিবি’। তিনি ওই সভার নাম দেন ‘ইনসাফ সভা’। আর প্রকাশ্য দিবালোকে বধূ ও তার প্রেমিককে কঞ্চি দিয়ে পেটানোর নিদান দেন ওই তৃণমূল নেতা । শাস্তি তিনি নিজের হাতেই দেন দু’জনকে । এদিকে এই ঘটনার পর প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও এই প্রকার তালিবানি কাদায় নির্যাতন মেনে নিতে পারছেন না তারা । গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই ঘটনা প্রথম নয় । ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী এই ধরনের শাস্তির মুখে প্রায়ই পড়তে হয় গ্রামবাসীদের । তৃণমূল বিধায়কের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কোনো ক্ষেত্রেই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়না বলে অভিযোগ তাদের ।।