এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৮ জুন : পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থেকে কাঁধে বাঁকে করে গঙ্গাজল নিয়ে মন্দিরের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ১৭ জন শিবভক্ত । সেই সময় একটা বেপরোয়া গতির বাইক এসে তাদের সজোরে ধাক্কা দিলে একজনের মৃত্যু হয় । আহত হয়েছেন আরও ৩ জন শিবভক্ত । পাশাপাশি বাইকে চড়ে আসা এক আরোহীর মৃত্যু এবং একজন গুরুতর জখম হয়েছে । পুলিশ মৃতদের মৃতদের বীরভূম জেলার লাভপুর থানার গোপতা গ্রামের বাসিন্দা সোমনাথ দাস (২৯) এবং কেতুগ্রামের হাড়মুর গ্রামের বাসিন্দা ফারুক শেখ (১৯) বলে চিহ্নিত করেছে । আহতদের মধ্যে দূর্বল দাস নামে এক পূণ্যার্থী এবং হাসানূর শেখ নামে আর এক বাইক আরোহীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,লাভপুর থানার গোপতা গ্রামে বাড়ি পূণ্যার্থীদের ওই দলটির । গোপতা গ্রামের পাশের গ্রাম ইন্দাসগোপ্তার শিবমন্দিরে আজ মঙ্গলবার সকালে তাদের ভগবান শিবের গঙ্গাজল দিয়ে জলাভিষেক করানোর কথা ছিল । সেই মত ১৭ জন পুন্যার্থীর একটা দল গোপতা গ্রাম থেকে সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুরে এসেছিলেন । গঙ্গানদীতে পুন্যস্নানের পর নিজের নিজের দুটি করে কলসে জল ভরেন তারা । তারপর বাঁক কাঁধে নিয়ে পায়ে হেঁটে রওনা দেন মন্দিরের উদ্দেশ্যে । সড়কপথের একধার ধরে লাইন দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ১৭ জন পুন্যার্থী । কিন্তু তারা উদ্ধারণপুর ঘাট থেকে কাটোয়া-বোলপুর রোড ধরে কেতুগ্রামের নিরোল বাসস্ট্যান্ডের কাছে আসতেই পিছন থেকে একটি অ্যাপাচি বাইকে চড়ে আসা ফারুক শেখ ও হাসানূর শেখ তাদের সজোরে ধাক্কা দেয় । পুন্যার্থীদের দল রাস্তার বাঁদিক ঘেঁষেই যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে । বাইকটি তাদের পরপর চারজনকে সজোরে ধাক্কা দেয় । সোমনাথ দাস পুন্যার্থীদলের একেবারে পিছনে ছিলেন । তাঁর দু’পা কার্যত থেঁতলে গিয়ে ঝুলে যায়। দুই বাইক আরোহীও ছিটকে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে কাঁদরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় । সেখানে বিক্রম দাস ও রাম মণ্ডল নামে দুই পুন্যার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় । সোমনাথ দাস, দূর্বল দাস, ফারুক শেখ এবং হাসানুর শেখকে স্থানান্তরিত করা হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে । সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি হলে ৪ জনকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু রাতের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সোমনাথ দাস ও ফারুক শেখের। দূর্বল দাসকে আজ মঙ্গলবার কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে । হাসানুর শেখ বর্তমানে বর্ধমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনান্য বন্ধুদের সঙ্গে বাইকের রেসারেসির কারনেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে ।
অন্যদিকে আজ সকালে মঙ্গলকোটের বক্সিনগর গ্রামে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মাদ্রাসা পড়ুয়া ১৪ বছর বয়স্ক দুই কিশোরের । বক্সিনগর গ্রামের বাসিন্দা ওই দুই কিশোরের নাম তফিজুল হক ও মিরাজুল শেখ । জানা গেছে,তফিজুল হক তার বন্ধু মিরাজুলকে বাইকে চাপিয়ে যখন বাদশাহী রোডে উঠছিল সেই সময় বর্ধমানের দিকে যাওয়া একটি পন্যবোঝাই লরির সঙ্গে বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । দুই কিশোর বাইক সহ লরির তলায় ঢুকে যায় । দু’জনেই গুরুতর আহত হয় । স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তফিজুল হককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মফিজুল শেখকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় তার ।।