এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৮ জুন : ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির৷ তারা ২০১৯ সালের ১৮ টা আসন পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি । এবারে ৬ টি হারিয়ে মাত্র ১২ টা আসন জিততে সক্ষম হয়েছে গেরুয়া শিবির । ফলাফল ঘোষণার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন যে মুসলিমরা এককাট্টা হয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে এবং সিপিএম হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েছে,যেকারনে তাদের এই প্রকার দুর্ভাগ্যজনক ফলাফলের মুখোমুখি হতে হয়েছে । এদিকে বিজেপির এই প্রকার খারাপ ফলাফল নিয়ে ‘হাটে হাঁড়ি ভেঙেছেন’ কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী রাজমাতা অমৃতা রায় । একটা বাংলা খবরের চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেছেন যে নির্বাচনী খরচ বাবদ কেন্দ্র থেকে যে টাকা পাঠানো হয়েছিল তা বুথস্তরে পৌঁছায়নি । জেলার নেতারা ওই সমস্ত টাকা নিয়ে নয়ছয় করেছে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন ।
একই অভিযোগ তুলেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের বিজেপি নেতা মহেন্দ্রনাথ কোঁয়ার । তার অভিযোগ শুধু নির্বাচনী খরচের টাকা নিয়ে নয়ছয়ই নয়, বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে বিজেপিকে হারাতে তৃণমূলের নির্বাচনী এজেন্ট ‘আই প্যাকে’র সঙ্গে রীতিমতো ষড়যন্ত্র করেছিল জেলা নেতৃত্ব । জেলা নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগরে মহেন্দ্রনাথ অভিযোগ করেন,’দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি হয়েছেন, সাংসদ হয়েছেন, রাজ্যে বিধানসভার তিনটে আসন থেকে ৭৭ টা আসনে পৌঁছে দিয়েছেন, লোকসভার ২ টো আসন থেকে ১৮ টা আসনে পৌঁছে দিয়েছেন । তাকে ভুল বোঝানো হয়েছে, তাকে সব কিছুতে বিভ্রান্ত করে হারানো হয়েছে । এর দায় জেলা নেতৃত্বকে নিতে হবে । মন্ডল স্তর পর্যন্ত ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে । আমি চাইবো কেন্দ্র নেতৃত্ব তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক ।’
তিনি বলেন, ‘তারা এভাবে মানুষের আবেগ নিয়ে খেলতে পারেনা । দিলীপ ঘোষ হলেন মানুষের কাছে একটা আবেগ, গোটা পশ্চিমবাংলার পৃথিবীর মুখ, সেই আবেগ দিয়ে কেন এভাবে খেলা হলো? আমাদের প্রচুর আশা ছিল যে আমরা এখানে জিতবো । এটা আমাদের জেতা আসন । এসএস আলুওয়ালিয়া ২০১৯ সালে আমাদের যেটার স্বাদ পাইয়ে দিয়েছিলেন । আজ পুরনো কর্মীরা কেউ নেই সব হারিয়ে যাচ্ছে । তারা জেলার কোন দায়িত্ব নেই । সমস্ত নতুন কর্মী আর তৃণমূলের দালাল । বর্ধমান উত্তর, বর্ধমান দক্ষিণ, ভাতার, গলসি প্রভৃতি সব জায়গায় তৃণমূলের দালাল গুলোকে এজেন্ট করেছে ।’মহেন্দ্রনাথ অভিযোগ, ‘তৃণমূলের ও আইপ্যাক এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে দিলীপ ঘোষকে হারানোর ষড়যন্ত্র করেছে জেলার নেতারা ।’ এমনকি এই ষড়যন্ত্রের পিছনে মন্ডল সভাপতিদের দিকেও অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন তিনি।
মহেন্দ্র নাথ কুমার আরও অভিযোগ করেন, ‘বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনে নির্বাচনী খরচ বাবদ কেন্দ্র নেতৃত্বের পাঠানো টাকা নয়ছয় করা হয়েছে । টাকা পয়সার কোন হিসাব নাই, দুর্নীতি হয়েছে । আমার দাবি যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে জেলা নেতৃত্বকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক । তারা বিজেপিকে ব্যবহার করে, মোদীদী, অটলজির নাম ব্যবহার করে তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজস করে চরম নোংরামো করেছে। তাদের উপযুক্ত শাস্তি হোক উচ্চ নেতৃত্বের কাছে এটাই আমার আবেদন । ওরা যদি আর কিছুদিন থাকে তাহলে বর্ধমান জেলায় বিজেপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে । কোন মানুষ বেরোবে না । ভাতার বিধানসভা ও গোটা লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে এত ভোট পাওয়া সত্ত্বেও দিলীপদাকে কেন বিজেপি নেতৃত্ব দিতে দিল না?’
বিজেপি নেতার বক্তব্য শুনুন 👇
মহেন্দ্রনাথের অভিযোগ,জেলা নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগের আঙুল উঠছিল । বিগত তিন বছর ধরে রাজ্য নেতৃত্ব তাদের সরানোর কোন চেষ্টাই করেনি বলে অভিযোগ তাঁর । অভিযোগ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ তাকে ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি ।।