এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৬ এপ্রিল : লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে আজ শুক্রবার সকাল ৭ টা থেকে ১৩ টি রাজ্যের ৮৮ টি আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজ্যগুলিতে নির্বাচনকে সামনে রেখে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেরালা, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, আসাম, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মণিপুর, রাজস্থান, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু ও কাশ্মীরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ভোটগ্রহণ চলছে। নির্বাচন কমিশনের মতে, এই পর্বে ১.৬৭ লাখ ভোটকেন্দ্রে ১৬ লাখেরও বেশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে। কমিশন বলেছে যে এই পর্বে ১৫.৮৮ কোটিরও বেশি ভোটার রয়েছে, যার মধ্যে ৮.০৮ কোটি পুরুষ,৭.৮কোটি মহিলা এবং ৫,৯২৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের । কমিশন জানিয়েছে, ৩৪.৮ লাখ ভোটার প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন।
এই পর্বে কেরালার ২০টি আসন ছাড়াও কর্ণাটকের ২৮টি আসনের মধ্যে ১৪টি, রাজস্থানের ১৩টি আসন, মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশের আটটি আসন, মধ্যপ্রদেশের ছয়টি আসন, আসাম, ও বিহারের পাঁচটি করে আসন, । ছত্তিশগড় এবং পশ্চিমবঙ্গের তিনটি আসনে এবং মণিপুর, ত্রিপুরা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের একটি করে আসনে ভোট হচ্ছে।দ্বিতীয় ধাপে,১,২০২ জন প্রার্থী ভোটে রয়েছেন, যার মধ্যে ১,০৯৮ জন পুরুষ এবং ১০২ জন মহিলা ৷ বুধবার সন্ধ্যায় শেষ হয় দ্বিতীয় ধাপের প্রচারণা । ভোটগ্রহণ ও নিরাপত্তা কর্মীদের চলাচলের জন্য কমপক্ষে তিনটি হেলিকপ্টার, চারটি বিশেষ ট্রেন এবং ৮০,০০০ যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বে রেকর্ড সংখ্যক ভোটারদের ভোট দেওয়ার আবেদন করেছেন এবং বলেছেন যে বিপুল সংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে তুলুন । প্রধানমন্ত্রী ভোটারদের বলেছেন যে তাদের ভোট তাদের কণ্ঠস্বর। বিশেষ করে যুবক ও নারীদের ভোট কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন,’যত বেশি ভোট হবে, আমাদের গণতন্ত্র তত শক্তিশালী হবে। আমাদের তরুণ ভোটার ও দেশের নারী শক্তির কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ, তারা যেন উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিতে এগিয়ে আসেন। লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৩টি রাজ্যের ৮৮টি আসনে ভোট হচ্ছে । ২০১৯ সালের তুলনায় গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপে ভোটের হার কম থাকায় ভোটের শতাংশ বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
পশ্চিমবঙ্গের যে ৩ টি আসনে ভোট হচ্ছে সেগুলি হল দার্জিলিং,বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ । গত লোকসভা ভোটে ওই তিন আসনেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি । বালুরঘাটে বিজেপি প্রার্থী রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং তৃণমূল প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র । দার্জিলিং এর বিজেপি প্রার্থী গোপাল লামা এবং তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী । রায়গঞ্জের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্ট এবং তৃণমূল প্রার্থী কার্তিক চন্দ্র পাল । পাশাপাশি তিন আসনেই প্রার্থী দিয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট। তার মধ্যে দার্জিলিং আসনে ভোটপ্রার্থী মুনীশ তামাং, রায়গঞ্জ আসনে কংগ্রেসের তরুণ প্রার্থী আলি ইমরান রামজ।
এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের একাদিক জায়গা থেকে অশান্তির খবর আসতে শুরু করেছে। বালুরঘাটের গঙ্গারামপুরের একাধিক বুথে ভোট লুঠ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। এছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুরের একাধিক জায়গায় ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগ উঠেছ্ব গঙ্গারামপুরেও ভোটারদের প্রভাবিত করার ।কুশমণ্ডিতেও ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে চোপড়ায় ভোটারদের ভয় দেখিয়ে ভোটদানের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ।বালুরঘাটের হরিরামপুর থেকেও ভোট দানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে । বালুরঘাটে এক বিজেপি কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বচশায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার ।।