প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ এপ্রিল : চাষে লোকসানের ধাক্কা সামলাতে না পেরে ফের রাজ্যের শস্যগোলায় আত্মাঘাতী হলেন এক কৃষক। মৃতের নাম স্বপন মন্ডল(৪৬)।তাঁর বাড়ি বর্ধমান-২ ব্লকের বড়শুলের অন্নদাপল্লীতে । পরিবারের দাবি লাগাতার চাষে লোকসানের কারণে বুধবার তিনি বিষ খান।তার পরেই তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই মারা যান স্বপন মন্ডল। এদিনই বর্ধমান হাসপাতাল পুলিশ মর্গে মৃতের দেহের ময়নাতদন্ত হয়।শক্তিগড় থানার পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে চাষি মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দরিদ্র চাষির এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
চাষি স্বপন মণ্ডলের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার সময় এদিন তাঁর ছেলে অয়ন মণ্ডল বর্ধমান
হাসপাতালেই উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন,আমার বাবা মূক ও বধির ছিলেন।চাষবাস ছিল তাঁর জীবন জীবিকা। নিজের ১২ কাঠা জমি ছাড়াও অপরের ৩ বিঘা জমি ভাগে নিয়ে স্বপন মণ্ডলে এ বছর আলু চাষ করেছিলেন।কিন্তু আলুর ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি জমিতে ফলা আলুতে দাগ থাকায় বাবা আলু বিক্রীর সময় ভালো দাম পান নি ।কম দামেই আলু বিক্রী করে দিতে হয়।আলু চাষ করে লোকসান হওয়ার পরেও বাবা বোরো ধান চাষ করেন। ধান চাষেও ক্ষতি হওয়ায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।তার উপর ছিল পাওনাদারদের চাপ ।
মৃতের দাদা শিবুপদ মণ্ডল বলেন,আলুতে দাগ থাকায় কার্যত জলের দরে বস্তা বস্তা আলু বিক্রি করেদিতে হয় আমার দাদাকে। তারমধ্যে আবার
সারের দোকানে প্রায় ১১ হাজার টাকা, ট্রাক্টরে জমি চষার জন্য সাড়ে ৬ হাজার টাকা দেনা থাকে।
দেনার টাকা পরিষোধের জন্য পাওনাদারদের তাগাদাও বেড়ে গিয়েছিল।এই সব নিয়ে বাড়িতেও অশান্তি বাড়ছিল।শেষে বুধবার জমিতে গিয়ে দাদা কীটনাশক খেয়ে নেন ।
এই প্রসঙ্গে বিডিও(বর্ধমান ২) সুবর্ণা মজুমদার বলেন,ঘটনার কথা শুনেছি।কি কারণে আত্মহত্যার ঘটনা সেটা খতিয়ে দেখা হবে।মৃত্যুর পিছনে চাষ না অন্যকিছু ঘটনা আছে সেটিও দেখা হচ্ছে।।