প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৭ মার্চ : আদালতের নির্দেশে কড়া পুলিশ পাহারায় দিল্লী যাত্রার পথে আর এক নতুন রহস্য তৈরিহল কেষ্ট ওরফে অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে । মঙ্গলবার বেলায় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ধাবায় পুলিশের উপস্থিতিতে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে একই টেবিলে বসে যে তিনজন ব্যক্তি খাওয়া দাওয়া সারলেন তারা করা? কি তাদের পরিচয় ? ওই তিনজনের মধ্যে একজনের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে কি উপদেশ দিয়ে গেলেন অনুব্রত এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতেও তৈরি হয়েছে জোর চর্চা।
এদিন সকালে ৭ টার খানিক আগে বিশাল পুলিশ বাহিনীর কনভয় অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে আসানসোল জেল থেকে বেরহয়।৮ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ পুলিশ অনুব্রতকে নিয়ে ’ল্যাংচা কুঠি’ নামে শক্তিগড়ের নির্দিষ্ট একটি খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়ায়। সেখানে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশবাহিনীর সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের নিরাপত্তাও ছিল।যেন আগে থেকে কথা হয়ে থাকা মতই ওই খাবারের দোকানের সামনে উপস্থিত ছিল ওই তিন ব্যক্তি । অনুব্রত গাড়ি থেকে নামার পর পুলিশ যখন তাকে ওই খবারের দোকানের একটি ঘরে নিয়ে যাচ্ছিল তখন সেই ঘরে একই সঙ্গে ঢোকে ওই তিন ব্যক্তি । এক টেবিলে বসে ওই তিন ব্যক্তি অনুব্রতর সঙ্গেই প্রাতরাশ সারেন।দোকানের পক্ষে শেখ আমরুল হক জানান,’অনুব্রত বাবু এদিন চারটি ডালকচুরী, তরকারি, ছোলার ডাল, স্পেশাল ল্যাংচা রাজভোগ দিয়ে প্রাতরাশ সেরেছেন। এদিন তিনি চা খাবেন বলেন। সবার খাবার খরচ ধরে বিল হয় ৯৯৫ টাকা।ওনার পি এ টাকা মেটান ।
কিন্তু গোটা ঘটনায় রহস্যের দানা বেঁধেছে শক্তিগড়ের খাবারের দোকানে পুলিশের উপস্থিতিতে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তিন সাধারণ ব্যক্তির প্রাতরাশ সারা নিয়ে । খাবারের টেবিলে বসেই ওই তিন জনের সঙ্গে প্রায় আধ ঘন্টা ধরে অনুব্রত মণ্ডল শলাপরামর্শ করে চলেন। যে তিনজন অনুব্রতর সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়া দাওয়া সারেন তাদের মধ্যে সুবুজ পাঞ্জাবী পরা যে ব্যক্তি ছিলেন তার নাম কৃপাময় ঘোষ বলে জানা গিয়েছে। এও জানা গিয়েছে কৃপাময় অনুব্রতর অত্যন্ত ঘনিষ্ট বীরভূমের টিএমসিপি নেতা। অপর গেঞ্জি পরা যুবক অনুব্রত কন্য সুকন্যার গাড়ির চালক তুফান মিদ্দা বলে জানা গেলেও কালচে শার্ট পরা অপর এক যুবকের সঠিক পরিচয় এখনও সামধে আসে নি । তবে বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছে কালচে শার্ট পরা অনুব্রত ঘনিষ্ট ওই যুবকের নাম ছটু সিং। গরু পাচার মামলায় কৃপাময় ও তুফান সিবিআইয়ের ডাক পেয়েছিল বলেও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ।
দেখুন ভিডিও 👇
বিচারাধীন বন্দি অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়ার ও শলাপরামর্শ করার ছাড়পত্র পুলিশ কিভাবে দিল তা নিয়ে স্বোচ্চার হয়েচে বিরোধীরা। পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌমরাজ বন্দোপাধ্যায় বলেন,এদিনের ঘটনা আরও একবার প্রমান করে দিয়েছে এখনও অনুব্রতর অঙ্গুলী হেলনেই চলছে রাজ্য পুলিশ । সবটাই আইন বিরুদ্ধ ভাবে হয়েছে। সিবিআই এর এই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা উচিৎ বলে সৌম্যরাজ বাবু দাবি করেছেন“। জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের কোন নেতা এই বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চান নি। আদালতের বিচার্জ বিষয়ে কোন মন্তব্য করবেন না বলে তারা পাশ কাটান ।।