এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,৩১ ডিসেম্বর : ভারত বিভাজনের পর ৭৫ বছর অতিক্রান্ত । বর্তমান ভারতের কোনো প্রদেশ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশু সম্ভাবনাও নেই । তা সত্ত্বেও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ‘যুজরাজ’ রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ চালিয়ে যাওয়ায় অনেকেরই তার কারন বোধগম্য হচ্ছিল না । কিন্তু সময়ের সাথে সাথে নিজেদের ‘মহান উদ্দেশ্য’ স্পষ্ট করে দিচ্ছেন গান্ধী নেহেরু পরিবার ও তাদের তাঁবেদার নেতারা ।
আসলে বিজেপির একমেবাদ্বিতীয়ম নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অসম লড়াইয়ে দেশ জুড়ে একেবারে পিছনে পড়ে গেছে শতাব্দী প্রাচীন দলটি । সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে অরুনাচল প্রদেশে ক্ষমতা দখল করলেও এখনো অধিকাংশ রাজ্যে কার্যত প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলেছে কংগ্রেস । এদিকে কপিল সিব্বাল,গুলাম নবি আজাদের মত বর্ষীয়ান নেতারা দলত্যাগ করায় আরও বিপাকে পড়ে গেছে ভারতের মসনদে সর্বাধিক সময় আসীন থাকা এই রাজনৈতিক দলটি । তাই এবার নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প খুঁজতে এখন উঠেপড়ে লেগেছে কংগ্রেসের পোড় খাওয়া বাকি বর্ষীয়ান নেতারা । তাই রাহুল গান্ধীর মধ্যে নরেন্দ্র মোদী ধাঁচের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র উদ্ভব বলে মনে করছে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল ।
আর তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে রাহুল গান্ধীর মধ্যে । কখনো তিনি নরেন্দ্র মোদীর কায়দায় পথচলতি মানুষকে জড়িয়ে ধরছেন । এছাড়া দলীয় কর্মসূচির শুরু থেকে এযাবৎ ক্ষৌরকর্ম পর্যন্ত করেননি রাহুল । মোদীর মতই বর্তমানে তাঁর মুখ ভর্তি সাদাপাকা দাঁড়ি গোঁফ । পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে শুধুমাত্র একটি টি-শার্ট পড়েই যাত্রা করছেন রাহুল গান্ধী । দলের নেতারা সাংবাদিকদের বলছেন রাহুল গান্ধীর উপর ঠান্ডার কোনো প্রভাব পড়ে না অর্থাৎ তিনি এখন “শীততাপ জয়ী সাধু”র পর্যায়ে চলে গেছেন । যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে । অনেকে ‘চরস’ নামক মাদকের প্রতিক্রিয়া বলেও কঠাক্ষ করছেন ।
কিন্তু দাড়িগোঁফ বাড়িয়ে ঠান্ডার মধ্যে শুধুমাত্র গেঞ্জি পড়ে ঘুরে বেড়িয়ে কি হাসিল করতে চাইছেন রাহুল গান্ধী ? রাজনৈতিক মহলের মতে, মূলত হিন্দু ভোট ব্যাঙ্কের ভরসায় দেশের দু’বারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন রাহুল গান্ধী । সেই ভোটব্যাঙ্ককে কিছুতেই তারা নিজের দিকে টানতে পারছে না । উলটে নরেন্দ্র মোদীর উপর হিন্দু ভোটারদের আস্থা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে । তার ওপর কিছুদিন আগে ফিরোজ খান গান্ধীর উত্তরসূরি রাহুলের ধর্ম পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল । তৎকালীন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা তখন সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেছিলেন রাহুল গান্ধী “পৈতেধারী ব্রাহ্মণ” । এবারে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র মধ্য দিয়ে রাহুল গান্ধীর মধ্যে নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তি তুলে ধরে এবং তাঁকে “শীততাপ জয়ী সাধু” সাজিয়ে বিজেপির হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে চাইছে কংগ্রেস,এমনটাই মনে করছে অভিজ্ঞ মহিল । অবশ্য এই যাত্রায় তিনি পাশে পেয়ে যাচ্ছেন মোদী বিরোধী বলে পরিচিত ফারুক আবদুল্লা,কমল হাসানের মত রাজনৈতিক নেতাদের । এখন দেখার কংগ্রেসের এই ভারত জোড়ো যাত্রার প্রভাব কতটা পড়ে বিজেপির হিন্দু ভোট ব্যাঙ্কের ওপর ।।