জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),০৭ জুলাই : ঘরবাড়ি বা রাস্তাঘাট, যে কোনো নির্মান কাজের জন্য দরকার প্রচুর বালি। আর তার জোগান দেওয়া হয় মূলত অজয়, দামোদর, ময়ূরাক্ষী সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি নদী থেকে । আগে বালি তোলার পর মোটামুটি নির্দিষ্ট জায়গায় বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর অফিসের সামনে মজুত করে রাখা হত। কিন্তু এখন ব্যবসার স্টাইল বদলে গেছে । নদী থেকে তুলে আনা বালি রাখা হচ্ছে ব্যস্ত জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়কের পাশে। এমনকি বেশ কিছু ক্ষেত্রে জাতীয় বা রাজ্য সড়কের কাছাকাছি গ্রামীণ সড়কের পাশেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে একের পর এক বালির স্তুপ । ভেদিয়া থেকে বর্ধমানগামী এনএইচ ২-বি অথবা নতুনহাট-গুসকরা রাস্তার দু’পাশে কিছুটা অন্তর দেখা যাবে অসংখ্য বালির স্তুপ । কোথাও কোথাও সেটা ছোটখাটো বালির ‘পাহাড়’-এর আকার ধারণ করেছে।
যাতায়াতের পথে সাধারণভাবে এই বালির স্তুপ বিশেষ কোনো সমস্যার সৃষ্টি করে না। সমস্যার সৃষ্টি হয় তখনই যখন সেই বালি নেমে আসে সড়কের উপর। রাস্তা হয়ে ওঠে সংকীর্ণ। যানবাহনের চাকায় পিছল কাটে । তখন সংশ্লিষ্ট রাস্তার পাশ দিয়ে যাতায়াত করাটা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বালির অবস্থান এমন হয় যে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে তার উপর দিয়ে সাইকেল বা মটরসাইকেল এর মত দু’চাকার গাড়ি চালানো বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। একটু অসতর্ক হলেও অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে যায়। যেকোনো কারণেই হোক পুলিশ বা স্থানীয় প্রশাসন এবিষয়ে নীরব বা উদাসীন থাকে। তারা কখনোই নিরাপদ দূরত্বে বালি রাখতে নির্দেশ দেয় না। অনেকের অভিযোগ,শাসক দলের সঙ্গে বালি ব্যবসায়ীদের ঘনিষ্ঠতা হলো নীরবতার কারণ।
পেশাগত কারণে এনএইচ ২-বি গুসকরা নতুনহাট সহ বেশ কয়েকটি সড়ক পথে নিত্য যাতায়াত করেন আউসগ্রামের শ্যামল ঘোষ। তিনি বললেন, ‘সাধারণভাবে খুব একটা সমস্যা হয়না। তবে যেসব জায়গায় বালি রাস্তার উপর নেমে এসেছে সেইসব জায়গায় চরম সমস্যা হয়। তাছাড়া হঠাৎ জোরে হাওয়া বইতে শুরু করলে চোখেমুখে বালি ঢুকে বিপত্তি ডেকে আনে। প্রশাসন ও বালি ব্যবসায়ীদের কাছে তার আবেদন,’আমার মত আপনার পরিবারের সদস্যরা ঐসব পথ দিয়ে যাতায়াত করে। সুতরাং সবার নিরাপত্তার স্বার্থে একটু সচেতন হোন।’
কথা হচ্ছিল জনৈক বালি ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি বললেন আগে মুষ্টিমেয় কয়েকজন এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এখন সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই আমরা যেসব জায়গায় বাড়ি তৈরির সম্ভাবনা বেশি মূলত সেইসব জায়গায় বালি রাখতে চেষ্টা করি। এতে আমাদের খরচ যেমন কমে তেমনি ক্রেতাও কিছুটা কম দামে বালি পায়।’ রাস্তার উপর বালি নেমে এলে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় সেটা তিনি মেনে নিয়ে বললেন, ‘চেষ্টা করি সতর্ক থাকতে।’।