এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২০ ফেব্রুয়ারি : আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইএসএফের ছাত্রনেতা হাওড়ার আমতার বাসিন্দা আনিস খানের খুনের ঘটনায় সরাসরি রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । রাজ্য সরকার পুলিশকে দিয়ে আনিশ খানকে খুন করিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন । পুরসভা নির্বাচন উপলক্ষে রবিবার মালদায় প্রচারে আসেন সুকান্ত মজুমদার । প্রচারের ফাঁকে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই দাবির সপক্ষে তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন,’মৃতের পরিবার বলছেন পুলিশের পোশাক পড়ে একজন বাড়িতে গিয়েছিল । তার সাথে দু’জন সিভিল ড্রেসে ছিলেন এবং তাঁরা নাকি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়েছিলেন । অথচ পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলছেন তাঁরা নাকি পুলিশের লোক নয় ৷ অন্য রাজ্য থেকে এসেছিল । ওনার জ্ঞাতার্থে বলে রাখি, মৃতের পরিবারের কথায় তারা নাকি বাংলায় কথা বলছিল । ভিন রাজ্যের প্রবাসী বাঙালী হলে কথার টান শুনে বোঝা যাবে । কিন্তু খুনিরা পরিষ্কার বাংলায় কথা বলছিল বলে মৃতের পরিবারের দাবি ।’ তাঁর কথায়, ‘আনিস খান কখন জলসা শুনতে গেছে এবং জলসা থেকে কখন ফিরেছে সমস্ত ডিটেইলস তাদের কাছে ছিল। স্থানীয় লোক এবং স্থানীয় থানা ছাড়া কারও পক্ষে এটা জানা সম্ভব নয় । অতএব পুলিশের দায় অন্য কারোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করবেন না ।’
আনিস খানের হত্যাকান্ডকে ‘গা শিউরে উঠার মত ঘটনা’ বলে অবিহিত করে সুকান্ত বলেন, ‘রাজ্য সরকার পুলিশের সাহায্য নিয়ে এভাবে বিরোধী কন্ঠস্বর মিটিয়ে দেওয়া যে চেষ্টা করছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ । আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি । যদিও আনিস খান আমাদের সম্পুর্ন বিপরীতধর্মী আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন । তবুও আমরা মনে করি এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক ।’
গরু পাচার কান্ডে অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেব-এর নাম জড়ানো প্রসঙ্গে এদিন সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। দেব যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেস আছে, তাই তাকে সিবিআই এবং ইডি ডাকবে । যদি ভালো জায়গায় থাকতেন তাহলে ওনাকে কোনও মঠ বা মন্দির থেকে ডাকতো । যেহেতু অসৎ সঙ্গে আছেন। এরকম ঘটনা ঘটবে । ওনার উচিত সিবিআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করা ।’
পাশাপাশি পুরসভা ভোটে টিকিট বিলি নিয়ে শাসকদলের অন্দরের ক্ষোভ নিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন,’পশ্চিমবঙ্গে পুর নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূলের যে গোষ্ঠী কোন্দলের রূপ নিয়েছে, তা আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে । প্রার্থী নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৃণমূলের মধ্যে এখন গোষ্ঠী কোন্দলের রূপ নিয়েছে । আগামীতে এই দলের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না ।’
এদিন সকাল দশটা নাগাদ মালদা শহরের পুরাটুলি এলাকার বিজেপির দলীয় কার্যালয় সংকল্প যাত্রার একটি নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করা হয় । দলের রাজ্য সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইংরেজবাজারের বিধায়িকা শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী এবং দক্ষিণ ও উত্তর মালদার দলের সভাপতিসহ অন্যান্যরা । এরপর ইংরেজবাজার এবং পুরাতন মালদা পুরসভায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে বিশাল র্যালি করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ।।