দিব্যেন্দু রায়,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৫ সেপ্টেম্বর : ৮ জন গরু পাচারকারীকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার পুলিশ । চারটি গাড়ি থেকে পুলিশ মোট ৬৭ টি গরু উদ্ধার করেছে । পুলিশ গাড়িগুলিকে আটক করেছে । ধৃতরা হল বীরভূম জেলার লাভপুরের বাসিন্দা দাউদতুর রহমান মল্লিক ও রাজকুমার ধীবর, মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকলের বাসিন্দা সেলিম শেখ ও আমিনুল মণ্ডল এবং মুর্শিদাবাদ জেলার বারোয়ান এলাকার বাসিন্দা নুর ইসলাম, লাল্টু শেখ,নয়ন শেখ ও ফরিদ শেখ । বৃহস্পতিবার রাতে বহরমপুর কাটোয়া সড়কপথে কেতুগ্রাম থানার বন্দর গ্রামের কাছে তাদের পাকড়াও করে পুলিশ । আজ শুক্রবার ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে পাঠানো হয় ।
পুলিশ সূত্রে খবর,বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই চারটি গরু বোঝাই পিকআপ ভ্যান বন্দর গ্রামের দিক থেকে কেতুগ্রামের দিকে আসছিল ৷ গাড়ির মধ্যে নিষ্ঠুরভাবে নিয়ে যাওয়ার সময় গরুগুলি যন্ত্রণায় চিৎকারও করছিল । সেই সময় বিষয়টি কেতুগ্রাম থানার পুলিশের একটি টহলদারি ভ্যানের নজরে পড়ে যায় । পুলিশ গাড়িগুলিকে আটকে চালকদের কাছে কাগজপত্র দেখতে চায় । কিন্তু তারা বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি । এরপর পুলিশ চারটি গাড়ির চারজন চালক ও চারজন খালাসিকে গ্রেফতার করে । গরুগুলিকে উদ্ধার করে কেতুগ্রাম থানার ফাঁকা চত্বরে চেড়ে দেওয়া হয় । আটক করা হয় গাড়িগুলিকেও ।
প্রসঙ্গত,গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করার পর এরাজ্যে বড়সড় গরু পাচার চক্রের হদিশ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । তদন্তকারী দল জানতে পারে বীরভূম,মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও পূর্ব বর্ধমান এই চারটি পাশাপাশি জেলায় গরু পাচারের রীতিমতো একটা ঘাঁটি তৈরি হয়েছে । বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান জেলার গরু পাচারকারীরা কেতুগ্রাম ও কাটোয়াকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করে নদীয়া ও মূর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার করছে বলে জানতে সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি(সিবিআই) । কিন্তু গরু পাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরেই সক্রিয় হয় পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ । পুলিশ নজরদারি বাড়াতেই একের পর এক গরু পাচারকারী গ্রেফতার হয় । তারপর থেকে গরু পাচার অনেকাংশে কমে যায় ।
বর্তমানে সকন্যা অনুব্রত মণ্ডল দিল্লির তিহার জেলে বন্দি । ইতিমধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতি মামলা নিয়ে রাজ্য জুড়ে তুমুল শোড়গোল শুরু হলে গরু পাচার মামলা মানুষের নজরে বাইরে চলে যায় । এদিকে শিথিল হয়ে যায় গরু পাচারকারীদের প্রতি পুলিশের নজরদারিও । আর সেই সূযোগে ফের সক্রিয় হয় গরু পাচারকারীরা । পুরনো সেই রুট দিয়ে ফের শুরু হয় দেদার গরু পাচার । বিষয়টি কেতুগ্রাম থানার পুলিশের কানে যেতেই নতুন করে নজরদারি চালাতে শুরু করে । আর নজরদারি বাড়তেই বিপুল সংখ্যক গরুসহ পাচারকারী ধরা পড়ল পুলিশের হাতে ।।