দিব্যেন্দু রায়,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৭ এপ্রিল : বর্ধমানে রোগীর চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সুইফট ডিজায়ার গাড়ি ও তেলের ট্যাঙ্কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল রোগীসহ ৩ জনের । গুরুতর আহত আরও ২ জন । বৃহস্পতিবার দুপুর এই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার গোন্নাসেরান্দি লস্করদিঘি মোড়ের কাছে বাদশাহী রোডে । নিহতদের নাম মদন মল্লিক(৭২), বাদশা নূর মল্লিক(৪৫) ও চাঁদ শেখ (৬৪) । গুরুতর জখম চম্পা বিবি নামে এক মহিলা এবং গাড়ির চালক মুন্না শেখকে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আনা হয় । কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় দু’জনকেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । হতাহতরা প্রত্যেকেই মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানার ফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা । পুলিশ ঘাতক ট্যাঙ্কারটি আটক করেছে ।
জানা গেছে,মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানার ফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ মদন মল্লিক হৃদরোগী । এদিন তাকে বর্ধমানের অনাময় হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল । সুইফট ডিজায়ার গাড়িটি ফুলিয়া গ্রামেরই জনৈক এক ব্যক্তির । বাবাকে বর্ধমানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই গাড়িটি ভাড়া করেছিলেন মদন মল্লিকের ছেলে বাদশা নূর মল্লিক । এদিন ভোরের দিকে তারা ফুলিয়া গ্রাম থেকে বর্ধমানের উদ্দেশ্যে রওনা হয় । গাড়িতে ছিলেন মদন মল্লিক,তার ছেলে বাদশা নূর মল্লিক,নূরের স্ত্রী চম্পা বিবি এবং চাঁদ শেখ নামে এক প্রতিবেশী । বর্ধমানে মদন মল্লিকের চিকিৎসা করানোর পর দুপুর নাগাদ মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয় গাড়িটি । বাদশাহী রোড ধরে মুর্শিদাবাদের দিকে যাওয়ার সময় গোন্নাসেরান্দি লস্করদিঘির কাছে দূর্ঘটনাটি ঘটে ।
স্থানীয় সূত্রে খবর,লস্করদিঘির কাছে আসতেই অন্য একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে যায় সুইফট ডিজায়ার গাড়িটি । আর ঠিক তখনই বিপরীত দিক থেকে আসা একটি তেলের ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সুইফট ডিজায়ার গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে সুইফট ডিজায়ার গাড়ির সামনের অংশ কার্যত দুমড়েমুচড়ে যায় । এদিকে বিকট শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন দূর্ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার কাজে হাত লাগায় । পরে খবর পেয়ে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ৩ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । সুইফট ডিজায়ার গাড়িটি প্রবল গতিতে চালানোর কারনেই এই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা ।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,বাদশা নূর মল্লিক মহারাষ্ট্রে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তার নূর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তার কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার কথা । কিন্তু তার আগেই দূর্ঘটনায় প্রাণ চলে গেল তার । এদিকে মর্মান্তিক দূর্ঘটনার খবর পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রাম জুড়ে ।।