এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,১২ নভেম্বর : নদীয়া জেলায় শান্তিপুরে এক পরিযায়ী শ্রমিক যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পুলিশ ধৃতদের সোনাই সাহা, রাকেশ শেখ দফাদার,চাঁদু শেখ দফাদার এবং ঝন্টু দাস বলে চিহ্নিত করেছে। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত সাগর দাস পলাতক । ধৃতদের আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতে পাঠানো হয় ।
জানা গেছে, মৃত যুবকের নাম সুমন দাস । তার বাড়ি শান্তিপুর পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠপাড়া এলাকায় । তিনি মহারাষ্ট্রের একটি হোটেলে কাজ করতেন । কালী পুজোর সময় তিনি বাড়ি ফিরিয়েছিলেন । ঘটনাটি ঘটে গত ৩ নভেম্বর । মৃত যুবকের ভাই মোহন দাসের অভিযোগ, ওইদিন কালীপুজোর শোভাযাত্রা ছিল । সাগর দাস তার দলবল নিয়ে শোভাযাত্রা বের করেছিল । সেই সময় সাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন । তার দাদার সাইকেলে করে শোভা যাত্রার এক পাশ দিয়ে আসার সময় শান্তিপুর গ্যাস গোডাউন সংলগ্ন চৌমাথার মোড়ে সাগরদের সঙ্গে কোন কারণে ঝামেলা হয় । দু পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে । সেই সময় সাগর ও তার দলবল তার দাদার উপর হামলা চালায় । তার দাদা প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালিয়ে যায় । কিন্তু তারা তার দাদাকে কিছু ধাওয়া করে । এরপর মাথপাড়া যশোদানন্দ প্রামানিক স্টেটের কাছে তার দাদাকে ১০-১২ জন মিলে ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি মারধর করে৷ ইঁট দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তার দাদা রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে লুকিয়ে পড়ে ।
জানা গেছে, খবর পেয়ে শান্তিপুর থানার পুলিশ গিয়ে আহত যুবককে উদ্ধার করে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে । সেখানে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে কৃষ্ণনগর-শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল স্থানান্তরিত করা হয় । জেলা হাসপাতালেও যুবকের স্বাস্থ্যের ক্রম অবনতি দেখে তাকে কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় । কিন্তু কলকাতার হাসপাতালের ছ’দিন ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যু হয় ওই যুবকের । ঘটনার দিনই শান্তিপুর থানায় একটি নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করে নিহত যুবকের ভাই । তার ভিত্তিতে পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায় । ঘটনার মূল অভিযুক্ত সাগর দাস পলাতক । পুলিশ তার সন্ধান চালাচ্ছে ।
এদিকে অভিযুক্তদের মৃত্যুদন্ডের দাবি তুলেছেন নিহত যুবকের মা লক্ষ্মী রানী দাস । তিনি জানান যে ষষ্ঠ শ্রেণীতে অকৃতকার্য হওয়ার পরেই ভিন রাজ্যে কাজ করতে চলে যায় তার সুমন । তার ছেলের সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিল না । তিনি বলেন,’আমার ছেলেকে যারা নৃশংস ভাবে মেরেছে তাদের প্রত্যেকের আমি ফাঁসি চাই।’।