প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২০ জুলাই : সিভিক ভলেন্টিয়ারের ’দাদাগিরি’ অব্যাহত বাংলা। এবার পূর্ব বর্ধমানের সমুদ্রগড় স্টেশনে কর্মরত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের হামলা আক্রমনে কাটা গেল এক যুবকের হাতের আঙুল। হাড়হিম করা এই ঘটনা জানাজানি হতেই শনিবার ক্ষোভ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্রগড় স্টেশন চত্ত্বর। কাটা আঙুল নিয়ে যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকা যুবক আব্দুল রহমান শেখকে দ্রুত উদ্ধার করে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে নাদনঘাট থানার পুলিশ।শুরু হয়েছে ঘটনার তদন্ত। এক্ষেত্রেও অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের শাস্তির দাবি জোরালো ভাবে উঠেছে।
জিআরপি ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,’সিভিক ভলেন্টিয়ারদের হামলা আক্রমণের শিকার হওয়া যুবক আব্দুল রহমান শেখের বাড়ি সমুদ্রগড়ের ভাঙাপাড়ায়। জখম যুবক আব্দুল রহমান বিকালে সংবাদ মাধ্যমকে জনান,’শনিবার বেলায় তিনি সমুদ্রগড় স্টেশনে বসে তাঁর মোবাইল ফোন ছবি , ভিডিও দেখছিলেন। ওই সময় তাঁর কাছে আসে দু‘জন সিভিক ভলেন্টিয়ার। তারা জোরজবস্তি তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। এরপর টানতে টানতে তাঁকে একটি বিশ্রামাগারে নিয়ে যেতে থাকে তারা । বিশ্রামাগারে তাঁকে জোর করে ঢোকানোর সময় তিনি বিশ্রামাগারের কোলাপসিবল গেট ধরে প্রতিরোধ করেন। ওইসময় ভারী বস্তু দিয়ে সিভিক ভলেন্টিয়াররা সজোরে তাঁর হাতে আঘাত করে। সেই আঘাতে তাঁর ডান হাতের একটি আঙুলের উপরের অংশ কেটে পড়ে যায় ।
আঙুল কাটা যাওয়ার পর যুবক আব্দুল রহমান শেখ ঘটনাস্থলে যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। তা দেখে স্টেশনে থাকা মানুষজন ক্ষোভে ফেটে পড়লে উত্তেজনা তৈরি হয়।খবর পেয়ে যুবকের পরিজন সহ স্থানীয় লোকজনও সমুদ্রগড় স্টেশনে পৌছে গিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে স্টেশন চত্ত্বর। তা জানতে পেরে নাদনঘাট থানার পুলিশ সেখানে ছুটে যায়।উত্তেজনা সামাল দিয়েই পুলিশ জখম যুবককে উদ্ধার করে কালনা হাসপাতাল নিয়ে যায়। কাটা যাওয়া আঙুলের অংশটিও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।তবে পরিকাঠামো না থাকায় আঙুলের ওই অংশ আর জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি।
জিআরপির দাবি, স্টেশনে বসে থাকা ওই যুবকের হাবভাব দেখে সন্দেহ তৈরি হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে পাশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন ওই যুবক সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সঙ্গে তর্কাতর্কি করতে শুরু করে। তারই মধ্যে কোলাপসিবল গেটের মাঝে লেগে যুবকের আঙুল কেটে যায়। যুবককে মারধর,টানা হেঁচড়ার অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করা হলেও জিআরপি আধিকারিকরা তদন্তে নেমে স্টেশনে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে। পুলিশও আলাদা করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁষছে যুবকের পরিবার সমুদ্রগড়ের বাসিন্দারা।।

