প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২০ নভেম্বর : পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুয়ায়ী দেবী জগদ্ধাত্রীর সেবক হিসাবেই মানা হয় ব্যাসদেব ও নারদ মুনিকে।তাই দেবী জগদ্ধাত্রীর সঙ্গে একই সঙ্গে ব্যসদেব ও নারদ মুণির পুজো হয় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে।এক আধ বছর ধরে চটোপাধ্যায় বাড়িতে এইভাবে জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে এমনটা নয়।পারিবারিক রীতি ও ষোড়শ উপাচার মেনে দেড়শো বছরেরও বেশী সময়কাল ধরে এ বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছে। পারিবারিক পুজো হলেও শক্তির এই দেবীর আরাধনা মাতোয়ারা হয় গোটা গ্রাম।
জামালপুরের কালীতলা পাড়ায় বসবাস বনেদি চট্টোপাধ্যায় পরিবারের।এই পরবিবারের কেউ
ডাক্তার ,কেউ উকিল,আবার কেউ সরকারী উচ্চ পদে চাকুরি করেন।কর্মসূত্রে বছরের বেশীরভাগ সময়টা পরিবার সদস্যরদের কলতাকায় থাকতে হয় । তবে জগদ্ধাত্রী পুজোয় সময় পরিবারের সকল সদস্য নিজেদের পৈতৃক বাড়িত চলে আসেন । সাবেকি বাড়ির এক পাশে রয়েছে দেবী জগদ্ধাত্রীর মন্দির ।মন্দিরের চারপাশ জুড়ে যেখানেই চোখ যাবে সেখানেই দেখা যায় শিল্প নৈপুণ্যতার ছোঁয়া।পুজোতেও শ্রদ্ধা ও ভক্তিবাবের কোন খামতি থাকে না।
পরিবারের কর্তা দিলীপ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ছেলে সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় পরবারের সবাইকে নিয়ে বংশের আরাধ্য দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো অর্চনা সারেন । পরিবারের কন্যা রুনা চট্টোপাধ্যায় জানালেন ,“দেড়শো বছরেরও বেশী সময়কাল ধরে তাঁদের বাড়ির মন্দিরে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো হয়ে আসছে ।তাঁদের বাড়ির দেবী প্রতিমাতেও রয়েছে বিশেষত্ব । এক চালার কাঠামোর ত্রনয়নী দেবী প্রতিমার এক পাশে থাকেন মহাভারতের রচয়িতা ব্যাসদেব,আর অপর পাশে থাকেন নারদ মুনি “।
দেবী জগদ্ধাত্রীর দুই পাশে তাঁদের স্থান দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে রুনা চট্টোপাধ্যায় বলেন,’পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী ব্যাসদেব ও নারদ মুনি দেবির সেবেক হিসাবেই পরিচিত। জগদ্ধাত্রী পুজোর মন্ত্রেও নারদমুনি ও ব্যাসদেবের কথা উল্লেখ রয়েছে ।’
সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় বলেন,আমাদের পরিবারে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরুর ইতিহাস সেভাবে কেউ লিখে যান নি । তবে পূর্ব পুরুষরা যেমন রীতি ও উপাচার মেনে পুজোর সূচনা করেছিলেন সেই রীতি মেনেই আজও আমরা পুজো করে যাচ্ছি । পূর্বে নবমীর দিন ছাগ বলিদান হলেও এখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । পরিবর্তে ছাঁচি কুমড়া বলি দেওয়া হয়। নবমীর দিন মন্দির প্রাঙ্গনে ভোগ অন্ন গ্রহন করেন ভক্তরা । এলাকার প্রর্তিটি মানুষ চটোপাধ্যায় পরিবারের দেবী জগদ্ধাত্রী দেবীর পুজোতে মাতোয়ারা হন’। সৌমাল্য চটোপাধ্যায় এও জানান,দশমীর পুজো শেষে দামোদর নদে হয় তাঁদের বাড়ির আরধ্যদেবী জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বিসর্জন ।।