“কেন ? — অভ্যাস-যোগ ? ওদেশে ছুতোরদের মেয়েরা চিঁড়ে ব্যাচে । তারা কতদিক সামলে কাজ করে, শোনো। ঢেঁকির পাট প’ড়ছে, হাতে ধান-গুলি ঠেলে দিচ্ছে আর এক হাতে ছেলেকে কোলে করে মাই দিচ্ছে । আবার খদ্দের এসেছে ; ঢেঁকি এদিকে পড়ছে, আবার খদ্দেরের সঙ্গে কথাও চলছে । খদ্দেরকে বলছে, তা’হলে তুমি যে ক’পয়সা ধার আছে, সে ক’পয়সা দিয়ে যেও,আর জিনিস লয়ে যেও।
দেখো,—ছেলেকে মাই দেওয়া, ঢেঁকি পড়ছে, ধান ঠেলে দেওয়া ও কাঁড়া ধান তোলা, আবার খদ্দেরের সঙ্গে কথা বলা, একসঙ্গে করছে । এরই নাম অভ্যাস-যোগ । কিন্তু তার পনর আনা মন ঢেঁকির পাটের দিকে রয়েছে, পাছে হাতে পড়ে যায় । আর এক আনা ছেলেকে মাই দেওয়া আর খদ্দেরের সঙ্গে কথা কওয়া । তেমনি যারা সংসারে আছে, তাদের পনর আনা মন ভগবানে দেওয়া উচিত । না দিলে সর্বনাশ-কালের হাতে পড়তে হবে। আর এক আনায় অন্যান্য কর্ম কর ।
জ্ঞানের পর সংসারে থাকা যায়। কিন্তু আগে ত জ্ঞান লাভ করতে হবে। সংসার-রূপ জলে মন-রূপ দুধ রাখলে মিশে যাবে, তাই মন-রূপ দুধকে দই পেতে নির্জনে মন্থন ক’রে– মাখন তুলে–সংসার-রূপ জলে রাখতে হয় ।”
কথামৃত—৩/৭/১