এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর চব্বিশ পরগনা,২৯ ফেব্রুয়ারী : তৃণমূল কংগ্রেসের কুখ্যাত নেতা শেখ শাহজাহানকে নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ ৷ তার আর তার দলবলের বিরুদ্ধে এলাকার মহিলাদের পিঠে বানানোর নাম করে দলীয় কার্যালয় ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ বা গণদর্শণে অভিযোগ উঠেছে । উঠেছে হাজার হাজার বিঘা জমি জবরদখল করে নেওয়া এবং সরকারি আধিকারিকদের অফিসে ঢুকে হামলা চালানোর মতো মারাত্মক সব অভিযোগ । শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে কবে ফুঁসছে সন্দেশখালী । এই সমস্ত অত্যাচারের কারণে মানুষের ক্ষোভ দেখে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন সন্দেশখালি মমতা ব্যানার্জির হাতছাড়া হয়ে গেছে । তার প্রতিফলন দেখা গেল আজ সন্দেশখালি-১ ব্লকের জেলিয়াখালি এলাকায় ।
আজ সকালে জেলিয়াখালি গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । তাকে দেখতে এবং তার সঙ্গে কথা বলতে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমান । এলাকার মহিলারা শঙ্খ এবং উলুধ্বনি দিয়ে প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানান । পুরুষরা বাজান কাঁসর ঘন্টা । শুভেন্দু এলাকার মানুষদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তাদের সাহস যোগান । ওঠে “জয় শ্রীরাম স্লোগান” । গ্রামের দেবী মনসার মন্দিরে পুজো দেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর টোটোই চড়ে তিনি গ্রাম ভ্রমণে বের হন । সমগ্র গ্রামজুড়ে কোথাও তৃণমূলের কোনো পতাকা লক্ষ্য করা যায়নি । লক্ষ্য করা যায়নি শাহজাহানের ছবি লাগানো কোন পোস্টার । গ্রামের ইলেকট্রিক কোনটি গুলিতে শুধু দেখা গেছে বিজেপির পতাকা এবং “ওঁ” লেখা গেরুয়া পতাকা । আজকের জেলিয়াখালির এই চিত্র পরিষ্কার বলে দিচ্ছে যে শুভেন্দু অধিকারীর দাবিই সঠিক । লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা ব্যানার্জির জন্য অশনি সংকেত দিচ্ছে সন্দেশখালী !
এদিকে দীর্ঘ টালবাহানার ৫৬ দিন পর সন্দেশখালি “ত্রাস” শেখ শাজাহানকে মিনাখাঁর বামনপুকুর বাজার এলাকায় খ্রিস্টান পাড়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ । আজ তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয় । পুলিশ ১৪ দিনে নিজেদের হেফাজত এর চেয়ে আবেদন জানায় । কিন্তু বিচারক শাহজাহানের দশ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন । অবশ্য শাহজাহানের আইনজীবী রাজা ভৌমিক ও অভিজিত্ ঘোষ তাদের মক্কেলের গ্রামীনের জন্য আবেদন করেছিলেন,যদিও তা খারিজ হয়ে যায় । শাহজাহানের মামলাটি ‘স্পেশাল কেস’ হিসাবে গণ্য করে নির্ধারিত সময়ের আগেই আদালতে সওয়াল জবাব হয় ।
বসিরহাট আদালত থেকে শাহাজাহানকে ‘গ্রিন করিডর’ করে আনা হয় কলকাতার ভবানী ভবনে । সংবাদমাধ্যমের চোখে কার্যত ধুলো দিয়ে বসিরহাট থেকে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে ঘটকপুকুর, ভোজেরহাট, সায়েন্স সিটি পেরিয়ে শাহজাহানকে নিয়ে আসে পুলিশ । কিন্তু শাহজাহানকে নিয়ে কেন এত গোপনীয়তা রাজ্য পুলিশের ? ইতিমধ্যেই রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে শাহজাহানকে অসুস্থ দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে । আপাতত ঘটনাক্রম সেই দিকেই যাচ্ছে বলে মনে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিজেপি নেতৃত্ব ।।