এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর দিনাজপুর,০৬ এপ্রিল : ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার দোতলা বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছে ন্যাশানাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে (এনআইএ) । এনআইএর দুজন আধিকারিক গ্রামবাসীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে অল্প বিস্তর জখম হয়েছেন । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দাবি করেছেন যে গ্রামবাসী নয় বরঞ্চ এমআইএই গ্রামবাসীদের উপর আক্রমণ করেছিল । আজ শনিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে থানা মাঠে রায়গঞ্জ আসনের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর সমর্থনে জনসভায় এই বিষয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘আমায় প্রশ্ন করছে, কালকেও ভূপতিনগরে হামলা হয়েছে। হামলা মহিলারা করেননি, এনআইএ হামলা করেছে। গদ্দার জানে হারবে। তাই কোথায় একটা চকোলেট বোম পড়েছিল ২০২২ সালে আর মধ্যরাতে যদি মহিলার বাড়িতে গিয়ে অত্যাচার করে তাহলে মেয়েরা কী করবে? শাখা-বালা পরে বসে থাকবে? না মাথায় ওড়না দিয়ে বসে থাকবে? নিজেদের সম্মান রক্ষা করবে না?’
অর্থাৎ ভূপতিনগরে এন আই এর ওপর গ্রামবাসীদের হামলাকে মুখ্যমন্ত্রী কার্যত স্বীকৃতি দিলেন বলে অভিযোগ । এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি আজ হুগলি জেলার তারকেশ্বরে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী রাষ্ট্রবিরোধী, সংবিধান বিরোধী কথা বলেছেন । এনআইএ এমন একটি সংস্থা যারা দেশ বিরোধী, দেশের ভিতরে থাকা রাষ্ট্রদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভারতের স্বাধীন সরকার তৈরি করেছিল । সংবিধান স্বীকৃত একটি সংস্থা যার কাজ ভারত মাকে সুরক্ষিত করা এবং যারা ভারতের ভিতর থেকে দেশকে দুর্বল করতে চায় সেই সিমির মতো সংস্থা, হিজবুল মোজাহিদ্দিনের মতো সংস্থা, আইএস এর মত সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতার এন আইকে সংবিধান দিয়েছে । মমতা ব্যানার্জি যে ভাষায় এনআইএকে আক্রমণ করেছেন তা বাবা সাহেব আম্বেদকর এর রচিত সংবিধানকে আক্রমণ করার শামিল ।’
নাড়ুয়াবিলা গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনাকে মুখ্যমন্ত্রী ‘চকোলেট বোম পড়েছিল’ বলে যে মন্তব্য করেছেন তার প্রতিক্রিয়া শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘২০২২ সালে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে ৫ জন তৃণমূলের কর্মীর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় । গোটা এলাকার সব বাড়ির ছাদ অ্যাসবেস্টস উড়ে চলে যায় । তারপরে উনি বলছেন চকলেট বোম ! মমতা ব্যানার্জির চকলেট বোম কি এইরকমই হয় ? আগে আমরা জানতাম বুড়িমার চকলেট বোম,এখনতো পিসিমার চকলেট বোম।’ পাশাপাশি তিনি রাজ্য ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের দুটো সরানোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে বলেছেন,’এখন ইলেকশন কমিশনার আওতায় গোটা ব্যবস্থাপনা রয়েছে । আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের । অবিলম্বে রাজ্যের ডিজিপি, এডিজি ল’এন্ড অর্ডার, পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি, ভূপতিনগরের ওসি এবং কাঁথির এসডিপিও সরানো দরকার ।’।