এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান,৩০ জুন : প্রায় একই সময়ে পরপর দুই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় । পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রতিমা চক্রবর্তী (৩৮) নামে এক বধূর শনিবার রাত গলার নলি কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ । একই সময়ে জেলার মন্তেশ্বর থানার পাকুরমুড়ি গ্রামে প্রবীর মণ্ডল(৩২) নামে এক যুবককে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতীরা । দ্বিতীয় ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সম্পত্তির দখলকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে খুন বলে পুলিশ মনে করলেও প্রথম খুনের ঘটনার কারন অজানা ।
জানা গেছে, মেমারি থানার সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রতিমা চক্রবর্তীর স্বামী হৃদয় চক্রবর্তী রাঁধুনির কাজ করেন । রান্নার কাজে প্রায় দিনই রাতে বাড়িতে থাকতে পারেন না । নিঃসন্তান প্রতিমাদেবী বাড়িতে একাই থাকতেন । শনিবার রাতেও বাড়িতে একাই ছিলেন তিনি । পরিবার সূত্রে খবর,সুলতানপুর গ্রামের চকদিঘিমোড়ে প্রতিমাদেবীর বোনের দোকান রয়েছে ।শনিবার রাত প্রায় ৮ টা নাগাদ তিনি বোনের দোকানে যান । কিছু পরেই তিনি বাড়ি ফিরে আসেন৷ তারপর রাত্রি প্রায় ১০ টা নাগাদ প্রতিমাদেবীর বোন দিদির খবর নিতে যান । কিন্তু তিনি দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ । ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তিনি ঘরের দরজা খুলতেই দেখেন রক্তে ভেসে গেছে গোটা ঘর । বিছানায় পড়ে রয়েছে তার দিদির গলার নলিকাটা মৃতদেহ । এরপর তিনি চিৎকার করে লোকজন ডাকাডাকি করে ৷ পরে খবর পেয়ে বধূর রক্তাক্ত নিথর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় মেমারি থানার পুলিশ ।
দ্বিতীয় ঘটনায় জানা গেছে,মন্তেশ্বর থানার পাকুরমুড়ি গ্রামের বাসিন্দা প্রবীর মণ্ডল কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন । শনিবার কলকাতা থেকে বাসে চড়ে বাড়ি ফেরেন । অন্যদিনের মত শনিবার রাত আটটা নাগাদ বাস থেকে নেমে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন । সেই সময় দুষ্কৃতীরা প্রবীরকে ঘিরে ধরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে পালিয়ে যায় । রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন তিনি । সেখানেই মৃত্যু হয় তার । পরে খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ । আজ রবিবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।
নিহত প্রবীর মণ্ডলের সম্পর্কীয় দাদা সুশান্ত সরকারের দাবি,’সম্পত্তির দখল নিয়ে বিবাদের জেরে প্রবীর খুন হতে হল। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দোষীকে খুঁজে বের করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’ তার অভিযোগ,প্রবীরদের অনেক পারিবারিক সম্পত্তি আছে । এক প্রতিবন্ধী ভাই ছাড়া বিষয় সম্পত্তি দেখভালের তেমন কেউ নেই। গ্রামে কিছু মানুষের সঙ্গে সম্পত্তির দখল নিয়ে কিছুদিন ধরে বিবাদ চলছিল ।’ ঘটনার তদন্তে নেমে এক সন্দেহভাজনকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে ।।