শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),০২ আগস্ট : একদিনের মুষলধার বৃষ্টিতে শষ্য গোলা পূর্ব বর্ধমানকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে ৷ তার উপর ডিভিসির ছাড়া জলে বিপর্যয় ডেকে এনেছে জেলার প্রচুর গ্রামে ৷ সদ্য রোয়ানো ধানচারা ভর্তি দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ মাঠ আজ জলের তলায় ৷ যেদিকে চোখ যায় শুধু জল আর জল । কার্যত সমুদ্রের আকার নিয়েছে বহু এলাকার মাঠ । মন্তেশ্বর ব্লকের মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমাটিয়া, বসতপুর,গাব্রুপুর, ভান্ডারবাটি, পিয়াগ্ৰাম, দেওয়ানগদি ও ভেলিয়াসহ একাধিক গ্রামের হাজার হাজার বিঘা জমি বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলের তলায় তলিয়ে গেছে৷ যদিও দুপুরের দিকে পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে ‘মাইথন এবং পঞ্চেত থেকে ডিভিসির জল ছাড়া বন্ধ করা হয়েছে। ব্যারাকপুর থেকে ডিএমজি শীঘ্রই জেলায় প্রত্যাশিত’ । এদিকে আকাশের মুখ ভার ৷ বৃহস্পতিবার রাতের মত ফের মুষলধার বৃষ্টিপাত শুরু হলে কি পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে তা ভেবেই আকুল এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে, তার ওপর ডিভিসি জল ছাড়ায় মন্তেশ্বর ব্লকের মাঝেরগ্রাম অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঁকা নদীর জলস্তর প্রচুর বেড়ে গেছে । সেই জল ছাপিয়ে গিয়ে মাঝের গ্রাম অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে । এই অঞ্চলের আমাটিয়া গ্রাম, বসতপুর, গাব্রুপুর, ভান্ডারবাটি ,পিয়াগ্ৰাম, দেওয়ানগদি ও ভেলিয়া গ্রাম সহ পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন গ্রামে সদ্য আমন ধানের চারা রোপনের কাজ শেষ হয়েছে । চাষিরা বিপুল টাকা খরচ করে জমিতে সারও ছিটিয়েছেন । সেই সব জমি জলের তলায় চলে গেছে । এর পাশাপাশি বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করা জমিগুলিও জলমগ্ন হয়ে গেছে । মাঠ থেকে আর একটাও শব্জি তোলার আশা ছেড়ে দিয়েছেন চাষিরা । ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে সারা বছর কিভাবে সংসার চালাবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না তারা ।
তবে শুধু কৃষি জমিই নয়,বিভিন্ন গ্রামে জল ঢুকে যাওয়ায় প্লাবিত হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি । ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কাঁচা বাড়ি ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে । জেলা প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন স্কুলে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে । বিতরণ করা হয়েছে শুকনো ও রান্না করা খাবার । ভাতার ব্লকের মাহাচান্দা অঞ্চলের পারহাট গ্রাম খড়ি নদীর জলে প্লাবিত হয়ে গেছে এবং ওই গ্রাম থেকে জেলার সিভিল ডিফেন্স রেসকিউ টিম ৪ জন দুর্গতকে উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ৷ পাশাপাশি জেলাশাসকের ভবনে খোলা কন্ট্রোল রুমে আজ থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত তিনজন করে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন সিএমওএইচ ৷।